সন্ত্রাসীদের মূলোত্‌পাটন না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে: ইরাকের প্রধানমন্ত্রী

সন্ত্রাসীদের মূলোত্‌পাটন না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে: ইরাকের প্রধানমন্ত্রী


ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি বলেছেন, তার দেশের প্রতিটি অঞ্চল থেকে সন্ত্রাসীদের উচ্ছেদ না করা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। মালিকি গতকাল আরো বলেছেন, সন্ত্রাসীরা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে এবং তাদের বিদেশি মদদপুষ্টরা ইরাককে আর অস্থিতিশীল ও নিরাপত্তাহীন করে তুলতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী নুরি মালিকি সন্ত্রাসী গ্রুপে যোগ দেয়া যুবকদেরকে জনগণের কাতারে শামিল হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেছেন, যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে তাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। তিনি আল আনবার প্রদেশের সুন্নি উপজাতিদের সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থানের প্রশংসা করে বলেছেন, উপজাতীয় নেতারা ফালুজা শহর থেকে সন্ত্রাসীদের বের করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তিনি বলেন, তারা যদি এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে তাহলে ফালুজা শহরে সেনা অভিযানের কোন প্রয়োজন হবে না

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী যেসব রাজনৈতিক দল আল-আনবার প্রদেশে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের বিরোধিতা ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল তিনি তাদেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ইরাকি জনগণের দাবির প্রতি সাড়া দিয়েই এ অভিযান চালানো হয়েছে এবং সন্ত্রাসীরা আর আল আনবার প্রদেশে ফিরে আসতে পারবে না। কারণ স্থানীয় উপজাতিদের সহায়তায় সেনাবাহিনী ওই প্রদেশের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।

এদিকে, ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনী গতকাল থেকে আল আনবার প্রদেশের কেন্দ্রীয় রামাদি শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে খালেদিয়ে এলাকায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করেছে। ট্যাংক ও হেলিকপ্টারের সাহায্যে পরিচালিত এ সেনা অভিযানে এ পর্যন্ত বহু সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। ইরাক সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভিযানের সময় সন্ত্রাসীরা স্থানীয় জনগণকে মানব ঢাল হিসেবে করেছে যাতে সেনাবাহিনী খালেদিয়ে এলাকায় ঢুকতে না পারে।

এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে ইরানের স্যাটেলাইট চ্যানেল প্রেস টিভি জানিয়েছে, ওই এলাকার স্থানীয় পুলিশ ও উপজাতীয় সশস্ত্র ব্যক্তিরা পুরো রামাদি শহর ও এর আশেপাশের এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ইরাকের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাআদুন আর দালিমি এবং স্থল বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আলী গেইদান আল-আনবার প্রদেশে সেনা অভিযান ও সেখানকার সর্বশেষ অবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য ওই প্রদেশ সফরে গেছেন। তারা স্থানীয় বিভিন্ন উপজাতীয় নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলা ছাড়াও সেনাবাহিনীর সঙ্গে ওই নেতাদের সমন্বয়ের বিষয়টিও পর্যবেক্ষণ করেছেন।

ইরাকের সেনাবাহিনী আল-আনবার প্রদেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হলেও মধ্যপ্রাচ্যসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো এটা তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে যে সেখানে নিরাপত্তাহীনতা ও সংকট আগের মতই অব্যাহত রয়েছে। ইরানে নিযুক্ত ইরাকের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মাজিদ আল শেইখ ইরাকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি কোনো কোনো আরব দেশের সমর্থন ও সাহায্য-সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, তার দেশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। তিনি ইরাকের মাটিতে সন্ত্রাসীদের পাঠানোর ক্ষেত্রে কয়েকটি আরব দেশ ও সংস্থার ভূমিকার সমালোচনা বলেছেন, এসব সন্ত্রাসীরা সিরিয়া থেকে ইরাকে প্রবেশ করেছে এবং তারা ইরাকি জনগণের আসল শত্রু। তিনি বলেন, সিরিয়া যুদ্ধের কারণে ইরাকে উগ্র ও সন্ত্রাসবাদের বিস্তার ঘটেছে।

এদিকে, ইরাকি সংসদ সদস্য খালেদ আল আসাদি বলেছেন, ইরাক সরকার আল আনবার প্রদেশে ততপর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন