'মার্কিন সরকার চোর, সে কখনও মানুষ হবে না'

তেহরানের জুমা নামাজের অস্থায়ী খতিব আয়াতুল্লাহ মুওয়াহহেদি কেরমানি বলেছেন, মার্কিন সরকারসহ ৬ জাতির সঙ্গে ইরানের সাম্প্রতিক পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া সত্ত্বেও ইসলামী এই দেশটির সঙ্গে মার্কিন সরকারের শত্রুতা মোটেও কমেনি।

'মার্কিন সরকার চোর, সে কখনও মানুষ হবে না'
তেহরানের জুমা নামাজের অস্থায়ী খতিব আয়াতুল্লাহ মুওয়াহহেদি কেরমানি বলেছেন, মার্কিন সরকারসহ ৬ জাতির সঙ্গে ইরানের সাম্প্রতিক পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া সত্ত্বেও ইসলামী এই দেশটির সঙ্গে মার্কিন সরকারের শত্রুতা মোটেও কমেনি।

তিনি বলেছেন, আসলে তার দেশের ইসলামী এবং আধিপত্যবাদ বিরোধী চরিত্রকেই ওয়াশিংটন সহ্য করতে পারছে না; আর মার্কিন সরকার সব সময়ই ইরানি জাতির শত্রু ছিল ও ভবিষ্যতেও শত্রু থাকবে, তাই আমেরিকার ইরান নীতিতে পরিবর্তন ঘটার আশা করা উচিত নয়।

'মার্কিন সরকারের মানুষ হওয়াটা অসম্ভব, কারণ তাদের মধ্যে আধিপত্যকামীতা বদ্ধমূল হয়ে গেছে' বলেও আয়াতুল্লাহ কেরমানি মন্তব্য করেছেন।

তিনি আজ তেহরানের জুমা নামাজের খোতবায় এইসব কথা বলেছেন।

আয়াতুল্লাহ কেরমানি ৬ বৃহত শক্তির সঙ্গে ইরানের পরমাণু আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছেন, এই আলোচনা ইরানের ইসলামী রাষ্ট্রের শান্তিকামী আদর্শ ও মূল্যবোধগুলো তুলে ধরার এক ভালো সুযোগ এবং এ আলোচনায় বিশ্ববাসীর কাছে এটা প্রমাণ করতে হবে যে, পশ্চিমাদের ও বিশেষ করে, মার্কিন সরকারের ইরান সংক্রান্ত সব পদক্ষেপই তেহরান সম্পর্কে বিশ্বে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু নয়।

মার্কিন সরকার ইরানের প্রেসিডেন্টের প্রতি আস্থাশীল নন বলে যে বক্তব্য রেখেছেন তার জবাবে তিনি বলেছেন, ইরানিরাও তোমাদের মোটেই বিশ্বাস করেন না। কেরমানি মার্কিন কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক ইরান বিরোধী নানা বক্তব্যের কথা তুলে ধরে বলেন, যতদিন মার্কিন কর্মকর্তারা ইরান সম্পর্কে অযৌক্তিক কথা বলা বন্ধ না করবেন ততদিন ইরানিরাও তাদের বিশ্বাস করবেন না।

তেহরানের জুমা নামাজের অস্থায়ী খতিব এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, 'শত্রুরা বলছে যে, আমরা নিষেধাজ্ঞা কমাবো না,-- জাহান্নামে যাক্ তোমাদের নিষেধাজ্ঞা না কমানো, আমরা নিজেরাই সুসজ্জিত হব ও তোমাদের মত চোরদের হাত আটকে ফেলব। ইরানের অর্থ বা টাকা আটকে দেয়া চুরি ছাড়া অন্য কিছু নয়, তোমরা কি চুরি করতে গর্ব অনুভব করছ?'

আয়াতুল্লাহ কেরমানি ইরানের অর্থ ফেরত দেয়ার ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সাম্প্রতিক টালবাহানাপূর্ণ ঘোষণা প্রসঙ্গে বলেছেন, 'ওরা পূর্ণ ঔদ্ধত্য দেখিয়ে বলছে, (চুরি করা) এই অর্থ থেকে আপাতত: ৪০০ কোটি ডলার তোমাদেরকে (ইরানকে) ফেরত দেব এবং তাও কিস্তিতে বা ভেঙ্গে ভেঙ্গে। তাদের এইসব দাম্ভিকতার প্রচুর দৃষ্টান্ত রয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও বিস্ময়ের ব্যাপার হল, আমেরিকা ও ইসরাইল ধ্বংস হোক-এই শ্লোগান ওবামাকে অসন্তুষ্ট করেছে বলে তিনি ঘোষণা করেছেন; অথচ আমেরিকার ৩৫ বছরের অপরাধগুলো ইরানের সচেতন ও জাগ্রত জনগণ ভুলে যাননি।'

আয়াতুল্লাহ কেরমানির এই বক্তব্য শুনে মুসল্লিরা 'আমেরিকা ও ইসরাইল ধ্বংস হোক' শ্লোগান দিয়ে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত জুমার সমাবেশকে কাঁপিয়ে তোলেন।

আয়াতুল্লাহ কেরমানি আরো বলেন, মার্কিন সরকারের মানুষ হওয়াটা অসম্ভব, কারণ তাদের মধ্যে আধিপত্যাকামীতা বদ্ধমূল হয়ে গেছে এবং যতদিন তাদের মধ্যে এই দম্ভ ও ভুল নীতি থাকবে আর তারই আলোকে তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলবে ততদিন 'আমেরিকা ও ইসরাইল ধ্বংস হোক'-এই শ্লোগানটি আরো জোরালোভাবে অব্যাহত থাকবে বলে মার্কিন সরকারের জানা উচিত।

আয়াতুল্লাহ কেরমানির এই বক্তব্য শুনে মুসল্লিরা আবারও 'আমেরিকা ও ইসরাইল ধ্বংস হোক' শীর্ষক শ্লোগান দিয়ে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রকম্পিত কোরে তোলেন।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন