”ইরানের পারস্য উপসাগরের “কীশ দ্বীপ

ইরানের পারস্য উপসাগরের “কীশ দ্বীপ


পারস্য উপসাগরের উত্তরাঞ্চল এবং কেন্দ্রীয় অঞ্চল জুড়ে ৯১ বর্গ কিলোমিটার স্থানব্যাপী এই দ্বীপটি অবস্থিত। দ্বীপটির আকৃতি ডিমের মতো অনেকটা। পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত কীশ দ্বীপের দৈর্ঘ্য হলো ১৫ কিলোমিটার।আর উত্তর দক্ষিণে দ্বীপটির প্রস্থ হলো প্রায় ৮ কিলোমিটার। কীশ দ্বীপের সর্বোচ্চ স্থানটির উচ্চতা হলো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৫ মিটার। ইরানের দক্ষিণ উপকূল থেকে এর দূরত্ব হলো ২০ কিলোমিটারের মতো। ইরানের পারস্য উপসাগরে যতোগুলো গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপ রয়েছে সেসবের মাঝে কীশ দ্বীপটি অন্যতম। সমগ্র বিশ্বের সাথে ইরানের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এই দ্বীপটির ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

বেশ পুরনো এই দ্বীপটি তার অস্তিত্বের ইতিহাসে বহু চড়াই উৎরাই দেখেছে, দেখেছে অনেক ভাঙা গড়া। তারপরও আজো অস্তিত্ব বজায় রেখেছে। কীশ দ্বীপটি নৌচালনা এবং মুক্তা কুড়ানোর জন্যে বিখ্যাত। এজন্যে কীশের আলাদা একটা গুরুত্ব রয়েছে। কীশের আবহাওয়ায় আর্দ্রতা রয়েছে বেশ। সমুদ্রের তীরে অবস্থানের কারণেই আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। আর উষ্ণতার মাত্রাও অনেক। বছরের কোনো ঋতুতেই এমনকি প্রচণ্ড শীতেও কীশের আবহাওয়ায় উষ্ণতার পরিমাণ ১৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নীচে নামে না। বছরের ছয় মাস মোটামুটি গরম থাকে এখানকার আবহাওয়া আর বাকি ছয় মাস বেশ উপভোগ্য আবহাওয়া বিরাজ করে।

কীশকে কবি ফররুখের ভাষায় প্রবালদ্বীপও বলা যেতে পারে। প্রচুর পরিমাণ প্রবাল এখানে রয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব দুই হাজার বছর আগে থেকে এখানে মানব বসতি গড়ে উঠেছে। কীশের সংস্কৃতি যেমন প্রাচীন তেমনি সমৃদ্ধ। তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবেও প্রাচীনকাল থেকেই কীশের খ্যাতি ছিল। ইতিহাস এবং ভূগোলের বহু বইতে অবশ্য এই দ্বীপটির বিচিত্র নাম পাওয়া যায়। যেমন কীশ, কামতিনা, আরিয়ান, কেইস এবং আরো অনেক নাম। ভেনিস পর্যটক মার্কোপুলু তাঁর ভ্রমণ কাহিনীতে লিখেছেন তিনি চীন সম্রাটের স্ত্রীর গলায় মুক্তার মালা দেখে বিস্মিত হন। আরো লিখেছেন ঐ মুক্তাগুলো কীশ দ্বীপ থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছিল।

ইরানের কালজয়ী কবি সাদিও সপ্তম শতকে তাঁর বিখ্যাত ‘গোলেস্তান’ কাব্যগ্রন্থে কীশ দ্বীপ প্রসঙ্গে লিখেছেন। তৎকালীন কীশের মর্যাদা, ব্যাপক বিস্তৃতি এবং কীশের বাণিজ্যিক লেনদেনের বিষয়টিই তিনি তুলে ধরেছিলেন তাঁর লেখায়। আরো অনেক পুরনো বইতেও কীশের বিচিত্র ব্যবস্থাপনার কথা লক্ষ্য করা যায়। যেমন জাঁকজমকপূর্ণ প্রাসাদের পর প্রাসাদ, চমৎকারসব বাগ বাগিচা, পানি সরবরাহ করার অভিনব ব্যবস্থা ইত্যাদি। আর এসব থেকেও প্রমাণিত হয় বাণিজ্যিক লেনদেনের জন্যে কতোটা প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল দ্বীপটি। সেইসাথে জনবসতি যে প্রচুর ছিল সেটাও সহজেই উপলব্ধি করা যায়।

কীশের এতোসব সুযোগ সুবিধা আর আনুকূল্যের কারণে এবং সেখানকার জনগণের সহযোগিতায় ইরানের সর্বপ্রথম ফ্রি ট্রেড জোন হিসেবে দ্বীপটি সমৃদ্ধি লাভ করে। বাণিজ্য ছাড়াও শিল্প এলাকা এমনকি টুরিস্ট স্পট হিসেবেও কীশ দ্বীপটি বেশ নামকরা। সমগ্র দ্বীপের শতকরা প্রায় ৫৫ ভাগ এলাকা পর্যটনের জন্যে নির্দিষ্ট, শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ এলাকা রাখা হয়েছে শিল্পের জন্যে আর ১৫ থেকে ২০ ভাগ এলাকা বাণিজ্যিক কাজের জন্যে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আরো বেশ কিছু এলাকা রাখা হয়েছে ভবিষ্যৎ কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যে। পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্যে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে কীশ হয়ে উঠেছে দর্শনীয় একটি দ্বীপ।

এইসব ব্যবস্থাপনার কারণে ইরানের ফ্রি ট্রেড জোনগুলোর মাঝে এই কীশ দ্বীপটি কেবল বিদেশী পর্যটকদের ট্যুর থেকেই সর্বোচ্চ আয় দেখাতে সক্ষম হয়েছে। ইরানের কীশ বাণিজ্য ও পর্যটন কেন্দ্র প্রমাণ করেছে ইসলামী সমাজের সকল মূল্যবোধ তথা সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সকল মূল্যবোধ অক্ষুণ্ণ রেখেও লক্ষ লক্ষ বিদেশী পর্যটককে আকৃষ্ট করা যায় এবং সেই সুবাদে অর্জন করা যায় বিদেশী মুদ্রাও। বিদেশী মুদ্রা অর্জন করার চমৎকার একটি উৎস এই পর্যটন কেন্দ্র। এর মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যেমন আসে তেমনি ইরানও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পরিচিতি পায়।

কীশ দ্বীপে রয়েছে উপকূলীয় বৈচিত্র্য, রয়েছে স্ফটিক স্বচ্ছ পানি, বহুরকমের প্রবাল, বিচিত্র রঙের অ্যাকুরিয়ামের মাছ এবং সর্বোপরি কীশে রয়েছে মন কেড়ে নেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এগুলো কীশ দ্বীপ দেখতে যাওয়া যে কোনো দর্শক বা পর্যটককেই যে নিঃসন্দেহে আকৃষ্ট করবে তা তো বলারই অপেক্ষা রাখে না। সবমিলিয়ে বিশেষজ্ঞদের বিশেষ করে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের অভিমত হল পৃথিবীর মধ্যে এমন একটি দ্বীপ একেবারেই বিরল যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যগুলোকে মোটামুটি একসাথে দেখতে পাওয়া যায়।

কীশ দ্বীপের অন্যতম একটি দর্শনীয় এবং প্রাচীন স্থান হলো ‘হারিরা’ নামক পুরনো শহর। দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে এই শহরটি অবস্থিত। এই শহরটি হিজরি অষ্টম শতকের বলে ইতিহাসে জানা যায়। হারিরা শহরের প্রাচীন নিদর্শনগুলো দর্শকদের নিয়ে যায় সময়ের পর্দা ভেদ করে ইতিহাসের অনেক পেছনে। সেখানে নিয়ে গিয়ে এই চমৎকার প্রবাল দ্বীপের প্রাচীন বাসিন্দাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। ৮০০ বছর আগে হারিরা শহরটির ওপর হামলা হয়েছিল। তার আগে যারা ওই শহর দেখতে গিয়েছিল তারা বলেছে সেখানে সাত তলা প্রাসাদ ছিল দেখার মতো। সেইসাথে ছিল সুন্দর সুন্দর বাগবাগিচা। বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ইয়াকুত হামাভি তাঁর বইতে লিখেছেন পারস্য উপসাগর এবং ভারতের মাঝে যেসব জাহাজ যাওয়া আসা করতো, সেগুলো এই কীশ হয়ে যেত।

কীশের আরেকটি দর্শনীয় স্থাপনা হলো শেইখ আলে আলি ভবন। শেখ আলে আলি ছিলেন কীশ দ্বীপের সাবেক শাসক। সমুদ্রের পাড়ে যে সুরম্য প্রাসাদ তিনি গড়ে তুলেছেন তা বিচিত্র দিক থেকে অনন্য সাধারণ। স্থাপত্য কৌশলের দিক থেকে অনেকেই কাজারি রাজবংশের শাসনামলের স্থাপত্যের সাথে মিলে যায় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
বিশ্বে যতোগুলো সুন্দর প্রবালদ্বীপ আছে, সেগুলোর মাঝে কীশ সুন্দরতম প্রবাল দ্বীপ হিসেবে পৃথিবীব্যাপী সমাদৃত। ৯০ বর্গকিলোমিটারের চেয়ে বেশি আয়তন বিশিষ্ট কীশ দ্বীপটি ইরানের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ১৮ কিলোমিটার উপকূল জুড়ে বিস্তৃত। কীশ শহর থেকে হরমুযগান প্রদেশের কেন্দ্রিয় শহর বন্দর আব্বাসের দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটার। অবশ্য এই দূরত্ব সমুদ্র পথের। আর আকাশপথে কীশ থেকে তেহরানের দূরত্ব এক হাজার বায়ান্ন কিলোমিটার। কীশ দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এক কথায় অনন্য সাধারণ। প্রশান্ত উপকূলে বালির চরাচর। বিশাল সমুদ্রের নীল বুকে পানির অবিরাম দোলা আর ফেনায়িত তরঙ্গের তীরে এসে মিশে যাওয়া-সব মিলিয়ে অসাধারণ এক পরিবেশ। এতো স্বচ্ছ এখানকার পানি যে পানির নীচের রেণুগুলো পর্যন্ত কাঁচের টুকরার মতো ঝলসে ওঠে।

এর বাইরে প্রাকৃতিক সবুজ পরিবেশ তো রয়েছেই। বছরের প্রায় সাত মাস সবুজ শ্যামল এই নয়নাভিরাম প্রকৃতির সৌন্দর্য বিরাজ করে এখানে।

প্রকৃতিপ্রেমী আর সমুদ্রবিলাসী দশ লক্ষাধিক পর্যটক এই কীশ দ্বীপে বেড়াতে আসে প্রতি বছর। কীশ দ্বীপটির উপকূল দীর্ঘতম সমুদ্র উপকূলগুলোর একটি। পৃথিবীর অপরাপর সমুদ্র উপকূলগুলোর মধ্যে খুব কমই পাওয়া যাবে যার বিস্তৃত এলাকাই ব্যবহারযোগ্য। সুন্দর সুন্দর মাছ যেগুলোকে অ্যাকুরিয়াম সাজানোর জন্যে ব্যবহার করা হয় কীশ দ্বীপের প্রান্ত জুড়ে সেইসব মাছ লক্ষ্য করা যায় অনায়াসেই।

মজার ব্যাপার হলো মাছগুলো নিজেদের একদম লুকিয়ে রাখে না, দর্শনার্থীদেরকে তারা তাদের অস্তিত্বের ঘোষণা দেয় নির্ভীকভাবে। এই অ্যাকুরিয়ামের মাছ কীশ দ্বীপের অন্যতম আকর্ষণ। অপরাপর দ্বীপের সাথে কীশ দ্বীপের স্বাতন্ত্র্য এখানে। সুন্দর এই মাছগুলো ছাড়াও মানুষ যেসব মাছ খায় সেসব মাছও পাওয়া যায় এই কীশ দ্বীপে প্রচুর পরিমাণে। স্বাভাবিকভাবেই এখানে জেলেরা মাছ শিকারের জন্যে ব্যতিব্যস্ত থাকে। নিশ্চিন্তে জেলেরা এখানে মাছ শিকার করতে পারে।

এর কারণটা হলো কীশ দ্বীপের উপকূলীয় অঞ্চলই বোধ হয় সবচেয়ে কম ভীতিকর একটি উপকূল যেখানে হাঙরের উপদ্রব খুব কম। মাঝে মাঝে এসব হাঙর দ্বীপের উপকূলের কাছাকাছি আসে ছোটো মাছ শিকার করার জন্যে। সাঁতার কাটে যারা কিংবা যারা সৈকতে অবকাশ যাপন করে তাদের জন্যে এসব হাঙর মোটেই ভীতিকর নয়। বরং পানির ভেতর হাঙরের আসা যাওয়াটাও বাড়তি একটি বিনোদন।
কীশের অসংখ্য দর্শনীয় বিষয়ের মাঝে অন্যতম হলো মাটির নীচের কৃত্রিম শহর ‘করিয’। সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের চমৎকৃতি আর সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যের জন্যে এই শহরটি দর্শনার্থীদের কাছে বেশ গুরুত্ববহ। এই শহরটি মূলত কীশের একটা প্রাচীন এবং শিল খাল। এর বয়স আড়াই হাজার বছরেরও বেশি। এই খালের পানি মিষ্টি অর্থাৎ সুপেয়। দ্বীপে যারা বসবাস করে তাদের খাবারের পানির সংকুলান করার ব্যবস্থা দীর্ঘদিন থেকে হয়ে এসেছে এই পানি দিয়েই। প্রাচীন এই খালটিই এখন মাটির নীচে বিস্ময়কর একটি শহরে রূপান্তরিত হয়েছে।

শহরটির আয়তন বা বিস্তৃতি দশ হাজার বর্গমিটারের উপরে। করিয শব্দটির অর্থই হলো খাল। যেহেতু খাল থেকেই শহরটির সৃষ্টি সেজন্যে এরকম নামকরণ। মাটি থেকে ১৬ মিটার নীচে শহরটি গড়ে তোলা হয়েছে। ইদানীং মাটির নীচের এই শহরে ইরানের নিজস্ব এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হস্তশিল্প সামগ্রীর দোকান যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিক রেস্টুরেন্ট, রয়েছে মিউজিয়াম, এম.পি.থিয়েটার, সম্মেলন কক্ষ এবং বিচিত্র শিল্প গ্যালারি।

কীশ দ্বীপের পশ্চিমাঞ্চলীয় সৌন্দর্যপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি হলো বিশাল একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ। এটি কীশের নীল উপকূলে নিজের স্থান করে নিয়েছে। গ্রিক জাহাজ হিসেবে এই প্রাচীন বস্তুটি ব্যাপকভাবে খ্যাতিমান। জাহাজটির ওজন সাত হাজার একষট্টি টন। দৈর্ঘ্য হলো ১৩৬ মিটার। ১৯৬৬ সালে গ্রিস ভ্রমণ করার সময় দ্বীপের দক্ষিণ উপকূলীয় কাদাপানিতে আটকে গিয়েছিল জাহাজটি।

বিশ্বরোড বা মহাসড়ক এখানকার আরেকটি পর্যটক আকর্ষণীয় এবং দর্শনীয় বিষয়। রিংরোডের মতো বৃত্তায়িত এবং বেশ প্রশস্ত এই সড়কটি সমগ্র কীশ দ্বীপকে ঘিরে রেখেছে। এই রোডের সাথে ইরানের বহু প্রদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। যার ফলে বিভিন্ন প্রদেশের শিল্প সামগ্রী এই কীশে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হয়েছে সহজেই। যেহেতু এই দ্বীপে বিশ্বের বহু দেশের পর্যটক আসেন সেজন্যে শিল্প পণ্যের সুবাদে সাংস্কৃতিক যোগাযোগও গড়ে উঠেছে বিশ্বের সাথে।

রাতের বেলা আকাশপথে যারা এই দ্বীপে যাওয়া আসা করেন উপর থেকে বৃত্তাকার আলোর ঝলকানি যে কী চমৎকার দৃশ্যের অবতারণা করে তা একবার চোখ বুজেই ভাবা যায়। ক্রিস্টাল স্টোনের চেইনের মাঝে ঝকঝকে একটি মুক্তা বসালে যেমন লাগবে পুরো দ্বীপটাকেই মনে হবে সেরকম একটা বিশাল আংটি।

যারা প্রকৃতি প্রেমী তাদের জন্যেও এই কীশ দ্বীপ অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ‘বগু’ নামে একটি এলাকা আছে এই কীশে। এলাকাটি বেশ উর্বর। যারা পশুপালন করে তাদের কয়েকটি পরিবার এই বগু এলাকায় বসবাস করে। এখানে রয়েছে প্রচুর গাছ গাছালি। এগুলো দ্বীপের পরিবেশের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করেছে। প্রাচীন কিছু গাছ আছে এখানে একেবারেই বিরল। এগুলোর নাম হলো ‘লুর’।

দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলেও রয়েছে একটি বন। এই বনটি প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠে নি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। ১৯৯২ সালে এখানে পরিকল্পিতভাবে গাছগুলো রোপন করা হয়েছে। প্রায় ৬০০ হেক্টর জমি জুড়ে এই বাগানটি গড়ে তোলা হয়েছে। ইউক্যালিপটাস গাছ, মিশরীয় সিল্ক গাছ, তেঁতুল গাছ, খুরমা খেজুর গাছসহ আরো বিচিত্র গাছ গাছালি এখানে রয়েছে। আরো বহু দর্শনীয় স্থাপনা রয়েছে কীশে। হেলিকপ্টারের সাহায্যে পুরো দ্বীপটি উপর থেকে দেখা যায় সুন্দরভাবে। সময় সুযোগ পেলে যাবেন দেখতে এই প্রত্যাশা রইলো।
সূত্রঃ তেহরান রেডিও

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন