হোয়াট হাউজ অপপ্রচার চালিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্বেষী নীতির ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছে

হোয়াট হাউজ অপপ্রচার চালিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্বেষী নীতির ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছে


ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু আলোচনা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আবারো জেনেভায় শুরু হতে যাচ্ছে।

এর আগে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য এবং জার্মানিকে নিয়ে গঠিত ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু আলোচনা গত ১৫ ও ১৬ অক্টোবর জেনেভায় অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে দু’পক্ষই আগামী ৭ ও ৮ নভেম্বর ভিয়েনায় পরবর্তী বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছিলেন। তবে ১৫ ও ১৬ অক্টোবর এবং ৭ ও ৮ নভেম্বরের বৈঠকের মাঝখানে এরই মধ্যে দু’পক্ষের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর পাশাপাশি কয়েকদিন আগে ভিয়েনায় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএ ও ইরানের মধ্যেও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু আলোচনা শুরুর প্রাক্কালে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জে কারনি সাংবাদিকদের বলেছেন, আমেরিকা ইরানের সঙ্গে পরমাণু আলোচনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করা কিংবা এ ব্যাপারে আরো বেশি স্বচ্ছতা সৃষ্টি ও শান্তিপূর্ণ হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা লাভ করাই হবে চলমান সংলাপের প্রধান উদ্দেশ্য।সঙ্গে তাল মিলিয়ে হোয়াইট হাউজ এ ধরণের মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি তুলে এবং কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইরানের বিরুদ্ধে পরমাণু বোমা তৈরির অভিযোগ এনেছে। আসলে মার্কিন কর্মকর্তারা এভাবে অপপ্রচার চালিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্বেষী নীতির ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছে। অথচ তাদের এ ধরনের কথাবার্তা ও আচরণ পারস্পরিক আস্থা সৃষ্টি ও চলমান আলোচনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

এ অবস্থায় ইরানের সঙ্গে গঠনমূলক পরমাণু আলোচনাকে আমেরিকা অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় বলে যে দাবি করা হচ্ছে তা লোক দেখানো বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ আমেরিকা আস্থা অর্জনের কথা বললেও তাদের আচরণ আস্থা অর্জনে মোটেও সহায়ক নয়। আমেরিকা সন্ত্রাসবাদ, মানবাধিকার ও নিরাপত্তার মত বিষয়গুলোকে তাদের মত করে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছে। অথচ এ বিষয়গুলো সমগ্র মানব জাতির ভাগ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় এমনভাবে কথা বলা উচিত যাতে আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।

পরমাণু বিষয়েও আমেরিকা দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করেছে। আমেরিকা নিজে পরমাণু অস্ত্র উতপাদন ও বিস্তার রোধ সংক্রান্ত এনপিটি চুক্তির নীতিমালা লঙ্ঘন করার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র পরমাণু অস্ত্রধর ইসরাইলকে সমর্থন দিচ্ছে। এ ছাড়া, আমেরিকা একমাত্র দেশ যে কিনা জাপানে পরমাণু বোমা ব্যবহার করেছে। মার্কিন কর্মকর্তারা পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অথচ দেশটি নিজেই নতুন ধরনের পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য কোটি কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সম্প্রতি বলেছেন, পরমাণু অস্ত্র মার্কিন প্রতিরক্ষা নীতির একটি অংশ। কেরির এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকার প্রতি আস্থা রাখা কঠিন।

কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, আমেরিকার নীতিকে হচ্ছে একদিকে আলোচনার কথা বলা অন্যদিকে হুমকি ও নিষেধাজ্ঞা ও বহাল রাখা। এ অবস্থায় কোনো আলোচনা সফল হতে পারে না। কিন্তু ইরানের ব্যাপারে এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে তাতে সব পক্ষই জয়ী হতে পারবে। ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধান পরমাণু আলোচক আব্বাস আরাকচি জেনেভায় ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের আসন্ন পরমাণু আলোচনা ইরানের পরমাণু বিষয়ে সব পক্ষকে কাছাকাছি অবস্থানে নিয়ে আসতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন