আফগানিস্তান পরিস্থিতির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রেডক্রস কমিটি

আফগানিস্তান পরিস্থিতির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রেডক্রস কমিটি

আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির এক প্রতিবেদনে আফগানিস্তানের জনগণের স্বাস্থ্য ও চিকিতসা পরিসেবার অবস্থার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বেসামরিক মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর কাজে বাধা না দেয়ার জন্য সংঘর্ষরত সব পক্ষের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

আফগানিস্তানের গণমাধ্যমগুলোতে কমিটির প্রতিবেদনের নানা দিক নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে আফগানিস্তানে নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, দেশটির জনগণ চিকিতসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এমনকি মানবিক ত্রাণ সাহায্যও তাদের কাছে ঠিক মত পৌঁছতে পারছে না। প্রায় নয় মাস ধরে ব্যাপক গবেষণা চালানোর পর তৈরি আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির প্রতিবেদনে জেলখানাগুলোর শোচনীয় অবস্থারও বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর আফগানিস্তানে সহিংসতা ও নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে যাওয়ায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় আফগান জনগণের চিকিতসা সেবা পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি তাদের ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাহের আজিমি গত সপ্তাহে বলেছেন, চলতি বছর সেদেশে সহিংসতা ও নিরাপত্তাহীনতার মাত্রা বহু গুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এ বছরটি ছিল আফগানিস্তানে জন্য সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী বছর। তিনি আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং বহু সংখ্যক বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, কয়েকটি বড় শহর দখল করা এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা ছিল শত্রুদের প্রধান উদ্দেশ্য কিন্তু এ লক্ষ্যে তারা পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে।

আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিরাপত্তা বাহিনীর দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, আফগান পুলিশ ও সেনাবাহিনী এ পর্যন্ত শত্রুর বহু হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে। সহিংসতা ও বোমা বিস্ফোরণে বহু সংখ্যক আফগান নাগরিক নিহত হওয়ায় এ বছরকে তিনি সবচেয়ে রক্তক্ষয়ের বছর হিসেবে অভিহিত করেন।

গত কয়েক বছরে আফগানিস্তানে বেসামরিক মানুষ হত্যার বিষয়টি সেদেশের সরকারের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ন্যাটো ও মার্কিন ড্রোন হামলায় বেশিরভাগ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। তালেবানের দমনের কথা বলে বিদেশি সেনাদের হামলায় এসব মানুষ নিহত হয়েছে। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এমন সময় এ বছরকে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী বছর হিসেবে অভিহিত করেছেন যখন আশা করা হচ্ছিল এক দশকের বেশি সময় ধরে ন্যাটো ও মার্কিন সেনা উপস্থিতির ফলে সেদেশে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।

গত প্রায় তিন বছর ধরে সহিংসতা ও নিরীহ মানুষ হত্যা বেড়ে যাওয়াসহ বিদেশি সেনাদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের কারণে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ন্যস্ত করার দাবি জোরদার হয়। এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব হস্তান্তরের কাজ তিন পর্বে সমাপ্ত হয়েছে।

সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন