লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ‘বারকা রাজ্য’ ঘোষণা করলো গেরিলারা

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ‘বারকা রাজ্য’ ঘোষণা করলো গেরিলারা


লিবিয়ার একটি গেরিলা গোষ্ঠী দেশটির তেলসমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলে একতরফাভাবে একটি ছায়া সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। এ ঘোষণা লিবিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য আরেকটি বড় ধরনের ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় গোত্র প্রধানদের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গেরিলা গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত ‘বারকা আন্দোলন’ এর ঘোষণা অনুযায়ী, এখন থেকে লিবিয়ার পূর্ব-অর্ধাংশ নিয়ে গঠিত বারকা অঞ্চল স্বায়ত্বশাসিত রাজ্য হিসেবে চিহ্নিত হবে।
স্ব-ঘোষিত বারকা আন্দোলনের প্রধান আব্‌দ-রাব্বু আল-বারাসি এ সম্পর্কে বলেছেন, ত্রিপোলি সরকার লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বলে তারা এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে ছায়া সরকার গঠনের ফলে বারকা অঞ্চলে কেন্দ্রের শাসন দুর্বল হয়ে পড়বে বলে দাবি করেন তিনি।
লিবিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর আজদাবাইয়ায় বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বারাসি। তিনি বলেন, “পূর্বাঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু বন্টন হবে আঞ্চলিক সরকারের প্রধান লক্ষ্য। ত্রিপোলি তেল-সম্পদ বন্টনের যে কেন্দ্র-শাসিত নীতি অনুসরণ করছে তার অবসান ঘটানো হবে।”
তবে বারকা আন্দোলন এ অঞ্চলের তেল সম্পদ কুক্ষিগত করতে চায় বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা নাকচ করে দেন আল-বারাসি। তিনি বলেন, “আমরা শুধু ১৯৫১ সালের সংবিধান অনুযায়ী বারকা অঞ্চলের অংশিদারিত্ব চাই।”
১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর ততকালীন রাজা ইদরিস লিবিয়ায় যে সংবিধান চালু করেন তাতে দেশটিকে সিরেনাইসা, ত্রিপোলিতানিয়া এবং ফেজান- এ তিন অংশে বিভক্ত করা হয়। ওই ভাগাভাগিতে লিবিয়ার পূর্ব-অর্ধাংশকে সিরেনাইসা (বারকা) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
বারকা আন্দোলনের প্রধান সংবাদ সম্মেলনে জানান, নবগঠিত সরকারে ২৪ জন মন্ত্রী থাকবে। তবে সে মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্র বা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কোনো পদ রাখা হয়নি। বেনগাজি, তোবরুক, আজদাবাইয়া এবং জেবেল আখদার প্রদেশের ওপর বারকা সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকবে বলে তিনি জানান।
প্রায় চার দশক লিবিয়া শাসনকারী সাবেক স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি ২০১১ সালে নিহত হওয়ার পর থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার সারাদেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হিমশিম খাচ্ছে। গাদ্দাফি বিরোধী যুদ্ধে যেসব গেরিলা গোষ্ঠী অংশ নিয়েছে তাদের বেশিরভাগই অস্ত্র জমা দেয়নি এবং নিজ নিজ এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। ২০‌১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে গাদ্দাফি বিরোধী আন্দোলন শুরু হয় এবং ওই বছরেরই আগস্টে তিনি ত্রিপোলি থেকে পালিয়ে যান। ২০১১ সালেরই ২০ অক্টোবর গাদ্দাফি গেরিলাদের হাতে ধরা পড়েন এবং নিহত হন।
সূত্রঃ রেডিও তেহরান

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন