ইমাম রেযা (আ.) এর নৈতিক, আধ্যাতিক এবং জ্ঞানগর্ভ বাণী -১
ইমাম রেযা (আ.) এর নৈতিক, আধ্যাতিক এবং জ্ঞানগর্ভ বাণী -১
১- যদি কেউ তার গুনাহের কাফফারা আদায় করতে না পারে তাহলে সে যেন মোহাম্মাদ (সা.) এবং তার আহলে বাইত (আ.) এর প্রতি অগুণিত দুরুদ শরীফ প্রেরণ করে কেননা তা তার গুনাহকে ধ্বংস করে দিবে। (মেসবাহুদ দুজা, পৃষ্ঠা৪১৯, উয়ুনুল আখবারে রেযা, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ২৬৫, আমালি সাদুক্ব, পৃষ্ঠা ১৩১, হাদীস ১২৩, ওসায়েলুশ শিয়া, খন্ড ৭, পৃষ্ঠা ১৯৪, হাদীস ৯০৯৩)
২- যখন কোন মুসলমান কোন দরিদ্রকে দেখবে তখন যদি সে যেভাবে সে ধণী ব্যাক্তিকে সালাম দেয় সেভাবে সালাম না দেয় তাহলে কেয়ামতের দিন খোদা তার উপরে রাগান্বিত থাকবেন। (শেখ সাদুক্ব, উয়ুনে আখবারে রেযা)
৩-আবা সালত হারওয়ি থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি ইমাম রেযা (আ.) কে ঈমান সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেনঃ ঈমান হচ্ছে আত্মার আক্বিদা এবং কথার ভাষা এবং বাহ্যিক আমলের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। (উয়ুনে আখবারে রেয়া, খন্ড২, পৃষ্ঠা ৩৪৮)
৪-যারা আমার যিয়ারতের জন্য আসবে আমিও কেয়ামতের দিন আমিও তাদের কাছে তিনটি স্থানে যাব যেন সে ভয় না পায়ঃ
-যখন তার ডাম ও বাম হাতে আমলনামা দেয়া হবে।
-পুল সীরাতে।
-হিসাব কিতাবের সময়।(আল খেসাল, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ১৬৮)
৫-দুনিয়ার সম্পদ পাঁচ বৈশিষ্টের আধিকারী জমা করতে পারে।
-অতি কৃপণ।
-উচ্চাভিলাষ।
- অতি অর্থগৃধ্নুতা
-আত্মীয়তা রক্ষা না করা।
-দুনিয়ার প্রতি মোহ এবং আখেরাতকে ভুল যাওয়া।
৬- গভীর ও সঠিক চিন্তার আলামত হচ্ছে সহিষ্ণুতা, জ্ঞান ও নীরবতা। নীরবতা হচ্ছে হিকমতের দরজা সমূহের মধ্যে অন্যতম, নীরবতা ভালবাসার বন্ধনকে শক্তিশালী করে এবং সঠিক পথে দিশারী। (উসুলে কাফি, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১১৩, বাবুস সামাত ওয়া হিফযুল লেসান, হাদীস নং ১)
৭- ইমাম রেযা (আ.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ তিনটি জিনীষ তিনটি অপর জিনীষের কারণে সম্পাদিত হয়।
-নামাজের সাথে জাকাতের হুকুম নাযিল করেছেন। যদি কেউ নামাজ পড়ে কিন্তু জাকাত আদায় না করে তাহলে তার নামাজও গ্রহনীয় হবে না।
- পিতামাতার নির্দেশ পালন করা এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা । যদি কেউ তার পিতা মাতার প্রতি কৃজ্ঞতাজ্ঞাপন না করে তাহলে সে খোদার প্রতি কৃজ্ঞতাজ্ঞাপন করলো না।
-তাকওয়া অর্জনের সাথে আত্মীয়তা বজায় রাখাঃ যদি কেউ আত্মীয়তা বজায় না রাখে তাহলে সে তাকওয়াও অর্জন করলো না। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৭৪, পৃষ্ঠা ৭৭)
৮- সে ব্যাক্তিই হচ্ছে প্রকৃত মুমিন সে যার মধ্যে এই তিনটি গুণ থাকবেঃ যে খোদা, রাসুল এবং ইমামদের সুন্নাতকে পালন করবে।
-খোদার সুন্নাতঃ নিজের গোপনীয়তা রক্ষা করা।
-রাসুল (সা.) এর সুন্নাতঃ জনগণের সাথে কোমল সূলভ ব্যাবহার করা।
-ইমমাদের সুন্নাতঃ দারিদ্রতায় এবং বীপদে ধৈর্য ধারণ করা।(উসুলে কাফি, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩৩৯)
৯-সগীরা গুনাহ কবীরা গুনাহের পথ উন্মোচন করে দেয়ঃ যদি কেউ অল্প এবং ছোট গুনাহ সম্পাদনে খোদাকে ভয় না করে তাহলে সে অতিরিক্ত এবং বৃহৎ গুনাহের কারণে তার অন্তরে খোদার প্রতি ভয়ের সঞ্চার হবে না এবং যদি খোদা মানুষকে বেহেস্ত বা দোযখের ভয় না দেখাতো তাহলে মানুষ তাকে অনুসরণ করতো না এবং নাফরমানি করতো।
১০- যদি কোন মুসলমানদের মধ্যে ১০টি গুণ না থাকে তাহলে সে তার আক্বল পরিপূর্ণ নাঃ
-তার থেকে ভাল আশা করা।
-মানুষেরা তার মন্দ থেকে নিরাপদে থাকবে।
-অপরের ভাল গুণকে বড় করে দেখবে।
-নিজের ভাল গুণকে ছোট করে দেখবে।
-তার কাছে কিছু চাইলে সে তার হৃদয় সংকুচিত হবে না।
-জ্ঞান অর্জনে সে ক্লান্তি অনুভব করবে না।
-খোদায়ী রাস্তায় দারিদ্রতা তার কাছে অপমানজনক সমৃদ্ধির চেয়ে প্রিয় হবে।
-খোদায়ী রাস্তায় অপমান তার কাছে শত্রুর কাছে সম্মানীত হওয়ার চেয়ে উত্তম বলে মনে করবে।
-অপ্রসিদ্ধতা অর্জনের চেয়ে জ্ঞাত থাকাকে সে উত্তম বলে মনে করবে।
-ইমামকে জিজ্ঞাসা করা হলো ১০ম বিষয়টি কি? তার উত্তরে তিনি বললেনঃ ব্যাক্তি চিন্তা করবে যে অমুক ব্যাক্তি আমার চেয়ে উত্তম। (তোহফুল উকুল, পৃষ্ঠা ৪৬৭)
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন