হতাশা কুফরের সমতুল্য

হতাশা কুফরের সমতুল্য
পবিত্র কোরআনের আয়াত ও পবিত্র ইমামগণের বানী থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল গোনাহ হচ্ছে একটি ব্যাধি। তবে এই অসুখের চিকিৎসা আছে এবং মহান আল্লাহ তার অসীম দয়া ও রহমতের মাধ্যমে তা ক্ষমা করে দিতে পারেন। সুতরাং গোনাহগারকে অবশ্যই এই ধ্বংসাত্মক, বিপদ জনক ও অন্ধকার গুহা থেকে বেরিয়ে আসতে আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। তাকে বিশ্বাস করতে হবে যে, এই ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এবং মহান আল্লাহ তাকে অবশ্যই ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহর করুণার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রেখে এবং ভাল ধারনা নিয়ে তওবা করতে হবে। অত:পর কৃত সকল পাপ মোচনের জন্য, অসুখ থেকে আরোগ্য লাভের জন্য এবং ব্যর্থতাকে সফলতায় পরিণত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে হবে। কেননা এটা করার শক্তি মহান আল্লাহ তাকে দান করেছেন। এছাড়াও তওবা করা, ক্রন্দন করা, আরোগ্য লাভের জন্য চেষ্টা করা এবং ব্যর্থতাকে সফলতায় পরিণত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা অপরিহার্য ও ওয়াজিব। অনুরূপভাবে হতাশা, অলসতা, অনীহা, নিরাশা এবং আমার সব শেষ হয়ে গেছে এমন কথা বলা হারাম এবং কুফরের সমতুল্য। এ সম্পর্ক পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে:
وَلاَ تَيْأَسُوا مِن رَّوْحِ اللَّهِ إِنَّهُ لاَ يَيْأَسُ مِن رَوْحِ اللَّهِ إِلاَّ الْقَوْمُ الْكَافِرُونَ
হে আমার বৎসগণ! তোমরা যাও ইউসুফ ও তার সহোদরদের অনুসন্ধান কর, আর আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয়ো না। কেননা,আল্লাহর করুণা হতে কাফের সম্প্রদায় ব্যতীত কেউ নিরাশ হয় না। তবে মহান আল্লাহর করুণা, দয়া ও ক্ষমা পাওয়ার অধিকারী হতে হলে আশাবাদীকে অবশ্যই প্রেক্ষাপট ও ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে। যেমন: গোনাহ করারকারণে তাকে অনুতপ্ত হতে হবে, গোনাহ পরিত্যাগ করতে হবে। কৃত গোনাহর ক্ষতিপূরণ দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। পরিত্যক্ত ইবাদত পালন করতে হবে। আমল আখলাক ও চরিত্রের সংশোধনকরতে হবে। তাহলেই সে আল্লাহর রহমত, করুণা ও মাগফিরাতের অধিকারী হবে। যেমন: একজন কৃষক তখনই ভাল ফসল পাওয়ার আশা করতে পারে যখন সে সময় মত জমির চাষ, পানি ও সার প্রয়োগ করবে, বীজ বপন করবেএবং কীটনাশক মুক্তির ব্যবস্থা করে থাকবে।
কোন প্রকার পদক্ষেপ ছাড়াই যদি শুধু আশা নিয়ে বসে থাকা হয় তাহলে সে আশা কোন সুফল বয়ে আনবে না বরং তা নিরাশায়পর্যবসিত হবে। যেমন: জমির মালিক যদি চাষাবাদ না করেই, বীজ বপন না করেই, পানি ও সার প্রয়োগ না করেই ভাল ফসলেরআশায় বসে থাকে তাহলে তা দুরাশা ছাড়া কিছুই নয়।
হাদিসের দৃষ্টিতে এমন আশাকে বৃথা এবং অনর্থক আশা বলে উল্লেখ করাহয়েছে:
ইমাম জাফর সাদিক(আ.)-এর কাছে এমন ব্যক্তি যে সব ধরণের গোনাহে লিপ্তহয়েছে অথচ আশা নিয়ে বসে আছে এবং বলে: আমরা মহান আল্লাহর দয়া ওকরুণার প্রতি আশাবাদী এবং মৃত্যু পর্যন্ত তারা এভাবেই অপেক্ষা করে, তাদেরসম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ইমাম সাদিক(আ.)বলেন: এরা শুধুমাত্র আশা নিয়ে বসেআছে এদের ভরসা নেই। কেননা যারা কোন কিছুর ভরসা করে তার জন্য চেষ্টাকরে। এবং যে জিনিসের ভয় পায় তা থেকে দূরত্ব অবলম্বন করে।

সূত্রঃ ইন্টারনেট


নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন