কুমাইল ইবনে যিয়াদ নাখয়ীর সংক্ষিপ্ত জীবনি
কুমাইল ইবনে যিয়াদ নাখয়ীর সংক্ষিপ্ত জীবনি
এস, এ, এ
ইবনে হাযমে আন্দলোসি কুমাইলের বংশকে এইরূপ উল্লেখ করেছেন:কুমাইল বিন যিয়াদ বিন নাহিক বিন হাইসাম বিন সাআদ বিন মালিক বিন হারিস বিন সাহবান বিন সাআদ বিন মালিক বিন নাখাআ। (জুমহেরাতুল আনসাবুল আরাব, পৃষ্ঠা ৪১৫ )
কুমাইলের গোত্র:
ইয়েমেনের গোত্র সমূহর মধ্যে বড় একটি গোত্র হচ্ছে নাখাআ গোত্র। ইসলাম আবির্ভাব হওয়ার সাথে সাথে এই গোত্রের লোক সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করে। যে গোত্রের জন্যে মহানবী (সা.) দোয়া করেছেন:
« اللَّهُمَّ بَارِک فِی النَّخَعِ »
হে আল্লাহ , নাখাআকে মোবারক কর।
এই মোবারক গোত্রের মানুষ , ইসলামের শুরুতে, অনেক সুনাম অর্জন করেছে এবং ফজিলতের অধিকারী হয়েছে এবং মহানবী ( সা.) এর সাথে থেকে বিভিন্ন যুদ্ধ সমূহে শাহাদত বরণ।
মালিক বিন আশতার নাখয়ী ছিলেন একজন ঈমানদার এবং সাহসী সর্দার। তিনি হজরত আলী ( আ.) এর পক্ষে থেকে যুদ্ধ করেছেন এবং অবশেষে মাবিয়ার, বিষ মিশ্রিত শরবতে শহীদ হন। মালিক বিন আশতারের শাহাদতের খবর হজরত আলী ( আ.) কে এতটাই মর্মাহত করে যে, তিনি উক্ত খবরটি শোনার পর অঝোরে ক্রন্দন করতে থাকেন।
হজরত কুমাইল ইবনে যিয়াদ ছিলেন উক্ত গোত্রের আরেকজন ব্যাক্তি। তিনি ছিলেন ইমাম আলি (আ.)এর একজন বিশ্বস্ত সাহাবি। যখন হজরত আলি (আ.) দুঃখ পেতেন তখন তিনি কুমাইলের সাথে মরুভুমিতে যেতেন এবং কুমাইলকে নিজের দুঃখের কথা বলতেন। তিনি হজরত কুমাইলকে বলতেন: হে কুমাইল! আমার অন্তর বিভিন্ন রহস্য এবং জ্ঞান দ্বারা পূর্ণ কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমি এমন কোন উপযুক্ত ব্যাক্তি পাইনি যার কাছে আমি আমার জ্ঞানগুলোকে স্থান্তরিত করবো। হজরত কুমাইল ইমাম আলি (আ.) থেকে শুনেছিলেন যে, হাজ্জাজ তাকে শহিদ করবে। কিছুদিন অতিবাহিত না হতেই হাজ্জাজের নির্দেশে তাকে নখদর্পনে রাখার চেষ্টা করা হয়। যখন তিনি আত্মগোপন করেন তখন হাজ্জাজ বাইতুল মাল থেকে কুমাইলের আত্মিয় স্বজনদের বেতনকে বন্ধ করে দেয় এবং তাদের উপরে অত্যাচার এবং নির্যাতন শুরু করে দেয়। কিন্তু তারপরেও কুমাইলের আত্মিয় স্বজনেরা তার আত্মগোপনের স্থান সম্পর্কে হাজ্জাজকে অবগত করে না। অবেশেষে কুমাইল চিন্তা করেন তার কারণে তার আত্মিয় স্বজনেরা কষ্ট ভোগ করবে এটা ঠিক না আর তাই তিনি স্বেচ্ছায় হাজ্জাজের কাছে উপস্থিত হন। তখন হাজ্জাজ তাকে বলে হে কুমাইল! আমি অনেকদিন ধরে তোমাকে খুঁজছি। বল তুমি কি চাও? কেননা তোমার জিবনের আর বেশি সময় বাকি নেই। তখন কুমাইল তাকে বলেন: আমার মাওলা আমাকে বলেছিলেন যে, হাজ্জাজ তোমাকে শহিদ করবে। যখন হাজ্জাজ হজরত আলি (আ.)এর নাম উচ্চারণ করে তখন কুমাইল দুরুদ পাঠ করে। তখন হাজ্জাজ অত্যান্ত রাগান্বিত হয় এবং আদহাম কাইসিকে কুমাইলকে হত্যা করার নির্দেশ দেয়া। আদহাম কাইসি কুমাইলের শরির থেকৈ তার মাথাকে তরবারির আঘঅতে বিছিন্ন করে দেয়। অবশেষে হাজ্জাজের নির্দেশে ৯০ বছর বয়সে শাহাদত বরণ করেন। শাহাদতের পরে তাকে কুফার পাশে সাভিইয়া নামক স্থানে দাফন করে দেয়া হয়।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন