নীলফামারীরর দর্শনীয় স্থান সমূহ

নীলফামারীরর দর্শনীয় স্থান সমূহ

সমূদ্র নয়, অথচ সমূদ্রের নামে নাম। নয়ন জুড়ানো বিপুল জলরাশির কারণে সবাই তাকে নীলসাগর বলে। আছে সাগর পাড়ের মত বৃক্ষরাজি, আছে নির্জনতা, আছে নানা বর্ণের পাখির কলকাকলী। পূর্বে এই বিরাট দীঘি ‘বিন্নাদীঘি’ নামে পরিচিত ছিল। জনশ্রম্নতি আছে যে, প্রায় ৫২০০ বছর পূর্বে এই দীঘিটি (যার আয়তন ৯৩.৯০একর) খনন করা হয়েছিল। মহাভারতে বর্ণিত বিরাট রাজা কুরম্ত্রের যুদ্ধে নিহত হলে তাকে এই দীঘির পাড়ে সমাহিত করা হয়। বিরাট রাজার দীঘি কালক্রমে ‘বিরনা দীঘি’ এবং সি,এস জরিপকালে ‘বিন্নাদীঘি’ নামে পরিচিত হয়। ০৮/০৩/১৯৮০খ্রি: তারিখে তৎকালীন রংপুরের জেলা প্রশাসক জনাব মাহে আলম এবং নীলফামারীর মহকুমা প্রশাসক জনাব আব্দুল জববার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে দীঘি সংস্কারের কাজ উদ্বোধনকালে এর নামকরণ করেন ‘‘নীলসাগর’’। এই স্থানটি নীলফামারী জেলা শহর থেকে ১৬কিঃমিঃ উত্তর-পশ্চিমে নীলফামারী-দেবীগঞ্জ-পঞ্চগড় পাকা সড়কের পাশে অবস্থিত। বর্তমানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে জেলা প্রশাসনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এখানে পাখির অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হয়েছে। পর্যটকদের আবাসিক সুবিধাসহ বিভিন্ন ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। দর্শনীর বিনিময়ে স্থান ভ্রমণসহ ছিপ দ্বারা মৎস্য শিকারের ব্যবস্থা আছে। নীলসাগরের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, পত্রিকা, যানবাহন এবং সর্বোপরি নীলফামারী-ঢাকাগামী আমত্মঃনগর ট্রেনের নামকরণ করা হয়েছে। নীলফামারী জেলা প্রশাসন নীলসাগর ভ্রমণের জন্য সকলকে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।
চিনি মসজিদ


কিভাবে যাওয়া যায়:
চিনি মসজিদটি সৈয়দপুর উপজেলায় অবস্থিত। নীলফামারী থেকে সড়কপথে এবং রেলপথে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে নেমে চিনি মসজিদ যাওয়া যায়।
কয়েক’শ দক্ষ কারিগর এবং শিল্পির একনিষ্ঠ পরিশ্রমের ফসল হিসেবে ১৮৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই সুরম্য মসজিদ, মসজিদের গায়ে লাগানো রয়েছে ২৪৩ টি শংকর মর্মর পাথর, পাথরের সাথে মসজিদের মসজিদের গায়ে লাগিয়ে দেয়া হয় ২৫ টনের মতো চীনামাটির টুকরা। নয়নাভিরাম এই মসজিদটির ২৭ টি মিনার রয়েছে যার ৫টি এখনও অসম্পূর্ণ।
অবস্থান:
ইসলাম বাগ, সৈয়দপুর, নীলফামারী
নীল সাগর
কিভাবে যাওয়া যায়:
গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গায় অবস্থিত নীলসাগরে নীলফামারী থেকে সড়কপথে যাওয়া যায়।
নীলফামারী জেলা শহর থেকে উত্তর পশ্চিমে ১৪.৫ কিলো মিটারদূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা মৌজায় অবস্থিত ৫৩.৯ একর আয়ত নবিশিষ্ট এ জলাশয় টির আনুমানিক খননকাল অষ্টম শতাব্দীর কোন একসময়ে ।হিন্দুশাস্ত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় খ্রিস্টপূর্ব নবম হতে অষ্টম শতাব্দীতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বিরাট রাজা পান্ডবদের এবং রাজা ভগ দত্ত করে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। পান্ডবরা যুদ্ধেপরাজিত হয়ে বারো বছরের জন্য বনবাসে যেতে বাধ্য হয়। নির্বাসনের স্থান মনোনীত করেন। পান্ডবদের তৃষ্ণা মেটাবার জন্য বিরাট রাজা তখন এই বিশাল দীঘিটি খনন করেন। বিরাট দীঘির অপভ্রংশ হিসেবে কালক্রমে বিরাট দীঘি,বিল্টাদীঘি এবং অবশেষে বিন্নাদীঘি হিসেবে পরিচিতি পায়।
১৯৭৯ সালে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক জনাব আঃজব্বার এ দীঘিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে আনুষঙ্গিক সংস্কারের পাশাপাশি নামকরণকরেন “নীলসাগর” ।
নীলসাগরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এর উদার উদাস পরিবেশ। শীতকালে অতিথি পাখির আগমনে উচ্ছল হয়ে ওঠে এর পরিবেশ। পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এর সুখ্যাতি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অবস্থান:
নীলফামারী
কুন্দ পুকুর মাজার
কিভাবে যাওয়া যায়:
নীলফামারী শহর থেকে সড়কপথে কুন্দপুকুর মাজার শরীফে যাওয়া যায়।
নীলফামারী সদর উপজেলার কুন্দুপুকুর ইউনিয়নে কুন্দ পুকুর মাজার অবস্থিত। সূদুর পারস্য হতে এ এলাকায় ইসলাম প্রচারের জন্য আগত হযরত মহিউদ্দিন চিশ্তি (রাঃ) এর মাজার কুন্দুপুকুর মাজার হিসাবে পরিচিত।
অবস্থান:
কুন্দুপুকুর ইউনিয়ন,নীলফামারী সদর , নীলফামারী।
যাদুঘর, নীলফামারী
কিভাবে যাওয়া যায়:
নীলফামারী ডিসি অফিসের পুরাতন ভবনে যাদু ঘর অবস্থিত।
নীলফামারী ডিসি অফিসের পুরাতন ভবনে যাদু ঘর অবস্থিত। ব্রিটিশ এবং ভারত উপ-মহাদেশের বিভিন্ন প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে।
অবস্থান:
ডিসি অফিস, নীলফামারীর পুরাতন ভবন
হরিশ্চন্দ্রের পাঠ
কিভাবে যাওয়া যায়:
নীলফামারী শহর থেকে সড়কপথে জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের হরিশ্চন্দ্র পাঠে যাওয়া যায়।
জলঢাকা থানার খুটামারা ইউনিয়নের অন্তর্গত পাথর খন্ডে পরিপূর্ণ সুপ্রাচীন ধ্বংসাবশেষ টিলা হরিশচন্দ্রের পাঠ বা রাজবাড়ী। এটি চাড়াল কাটা নদীর দক্ষিণ তীরে প্রায় এক বিঘা জমির উপর উঁচু ঢিবি। ঢিবির উপর পাঁচ খন্ড বড় কাল পাথর জড়ে আছে। পাথরগুলো ঢিবির মাটিতে ডুবে যায় আবার ভেসে উঠে বলে পার্শ্ববর্তী স্থানের অধিবাসীদের বিশ্বাস।
অবস্থান:
খুটামারা ইউনিয়ন, জলঢাকা
ভিমের মায়ের চুলা
কিভাবে যাওয়া যায়:
নীলফামারী শহর থেকে সড়কপথে ভীমের মায়ের চুলা যাওয়া যায়।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কমপেস্নক্স এর উত্তর-পশ্চিম দিকে ২০০ মিটার দূরে ‘ভীমের আখা’ বা ’ভীমের মায়ের চুলা’ অবস্থিত। এটি তিন দিকে উঁচু মাটির প্রাচীর বেষ্টিত একটি স্থাপনা যার প্রাচীরের উপরের তিনটি স্থান অপেক্ষাকৃত উঁচু। এর ভিতরের অংশ গভীর ও বাইরের তিন দিক পরিখা বেষ্টিত।
অবস্থান:
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কমপেস্নক্স এর উত্তর-পশ্চিম দিকে ২০০ মিটার দূরে ‘ভীমের আখা’ বা ’ভীমের মায়ের চুলা’ অবস্থিত
নীল কুঠি
কিভাবে যাওয়া যায়:
নীলফামারী শহর থেকে সড়কপথে
ব্রিটিশ আমলে নীল কুঠিয়ালদের কুঠি হিসেবে ব্যবহৃত হতবর্তমানে নীলফামারী অফিসার্স ক্লাব হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে
অবস্থান:
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সংলগ্ন
ধর্মপালের রাজবাড়ী
কিভাবে যাওয়া যায়:
জলঢাকা উপজেলার গড় ধর্মপালের র্পর্বদিকে একটি ছোট নদীর তীরে ধর্মপালের রাজ বাড়ী অবস্থিত। নীলফামারী শহর থেকে সড়কপথে ধর্মপালের রাজ বাড়ী যাওয়া যায়।
গড় ধর্মপালের র্পর্বদিকে একটি ছোট নদীর তীরে ধর্মপালের রাজ প্রাসাদ ছিল। ধর্মপালের গড় থেকে ১ মাইল উত্তর-পশ্চিমে একটি মজে যাওয়া জলাশয় রয়েছে। যার পূর্ব পাড়ে বাঁধানো ঘাট ও একটি ৬ ফুট উঁচু ঢিবি এবং ঢিবির ভিতরের প্রাচীরের ইট দেখে অনেকে এটাকে ধর্মপালের রাজবাড়ি বলে মনে করেন।
অবস্থান:
জলঢাকা উপজেলার গড় ধর্মপালের র্পর্বদিকে একটি ছোট নদীর তীরে ধর্মপালের রাজ বাড়ী অবস্থিত
ময়নামতির দুর্গ
কিভাবে যাওয়া যায়:
ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের আটিবাড়ি গ্রামে চাড়াল কাটা নদীর পশ্চিম তীরে ‘ময়নামতি দূর্গ’ অবস্থিত। নীলফামারী শহর থেকে এবং অন্যান্য উপজেলা থেকে সড়কপথে ময়নামতির দুর্গ যাওয়া যায়।
রাজা ধর্মপালের বিধবা শ্যালিকা ময়নামতির নামে নির্মিত ‘ময়নামতি দূর্গ’ চাড়াল কাটা নদীর পশ্চিম তীরে ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের আটিবাড়ি গ্রামে অবস্থিত। আয়তাকার এ দূর্গের চারিদিকে ৮ ফুট উঁচু, ১২ ফুট উঁচু এবং প্রায় ৩ হাজার ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট দূর্গ বেষ্টনী রয়েছে। বেষ্টনী দেয়াল ঘেঁষে ৩০ ফুট প্রশসত্ম পরিখা অবস্থিত।
অবস্থান:
ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের আটিবাড়ি নামক স্থানে ময়নামতির দুর্গ অবস্থিত ।
সূত্রঃ ইন্টারনেট

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন