নবজাতকের গোসল নিয়ে ভুল ধারণা
নবজাতকের গোসল নিয়ে ভুল ধারণা
শিশুদের গোসল করানো নিয়ে আমাদের দেশে প্রচলিত আছে নানা ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কার। নানা নিয়মকানুনও চালু আছে সমাজে। এগুলো সব সময় স্বাস্থ্যসম্মত কি না, জন্মের কত দিন পর কীভাবে গোসল করানো উচিত ইত্যাদি জেনে নেওয়াই ভালো।
নাভি পড়ার আগে গোসল নয়?
মুরব্বিরা অনেক সময় বলে থাকেন, শিশুর নাভি না পড়া পর্যন্ত গোসল দেওয়া ঠিক নয়। আসলে এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। স্বাভাবিক ওজনের একটি সুস্থ শিশুকে (ওজন ২.৫ থেকে ৪ কেজি) জন্মের তিন দিন পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই গোসল করানো উচিত। নাভি না পড়লেও গোসল করানো যায়। কম ওজনের অসুস্থ দুর্বল শিশুর অনেক সময় দেহের তাপমাত্রা বেশি কমে যেতে পারে বলে আরও দেরি করা যেতে পারে, তা না হলে স্বাভাবিকভাবে একটি নবজাতক শিশুকে পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত করতে তিন দিনের বেশি দেরি করার কোনো অর্থ হয় না।
বেশি গোসল করালে ঠান্ডা লাগে?
নিয়মিত ফোটানো কুসুম গরম পানিতে গোসল করালে শিশুর ঠান্ডা লাগার কথা নয়। বরং আমাদের এই উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় গোসল না করালেই বরং শিশু অস্বস্তি বোধ করে, বারবার ঘেমে যায়। ঘাম বসে গিয়ে ঠান্ডা লাগতে পারে। এ ছাড়া অপরিচ্ছন্ন থাকলে চর্মরোগ বা ছত্রাক সংক্রমণ ইত্যাদিও হতে পারে। যেকোনো আবহাওয়ায় ছোট-বড় শিশুকে প্রতিদিন হালকা গরম পানিতে গোসল করানো উচিত। কেননা শিশুরা সাধারণত বেশি ঘামে। বৃষ্টির দিন, মেঘলা দিন বা আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলে গোসল করাতে না চাইলে হালকা গরম পানিতে আরামদায়ক সুতি কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে দিন। গোসলের সময় ও পরপরই ফ্যান বন্ধ রাখুন। গোসল শেষে দ্রুত শুকনা কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছে জামাকাপড় পরিয়ে দিন। এতে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকবে না। মাথা ও চুলে যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকেও লক্ষ রাখুন।
গোসলের পানিতে অ্যান্টিসেপটিকের ব্যবহার?
ছোট বা বড় কারোরই গোসলের পানিতে সব সময় ডেটল, স্যাভলন, সেনিটাইজার বা অ্যান্টিসেপটিক দ্রবণ ব্যবহার করা উচিত নয়। অ্যান্টিসেপটিক দ্রবণ বা সাবান ত্বকের উপকারী জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়াকেও ধ্বংস করে। ফলে ত্বকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাহত হয় ও ক্ষতিকর জীবাণুর সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। তা ছাড়া এগুলো বেশ কড়া রাসায়নিক ও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এমনিতে নবজাতক শিশুরা যেহেতু বাইরের ধুলা-ময়লার সংস্পর্শে তেমন আসে না, তাই রোজ সাবান দেওয়ারও দরকার নেই। সপ্তাহে এক দিন সাবান ও শ্যাম্পু সহযোগে গোসল করাতে পারেন।
সূত্রঃ শিশু বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন