গ্যাসট্রিক

গ্যাসট্রিক
গ্যাসট্রিক আমাদের সমাজে একটি আলোচিত শব্দ। এটি অনেকের কাছে নিত্যদিনের কষ্ট বা রোগ বলে বিবেচিত। গ্যাস থেকে গ্যাসট্রিক হয়- এটাই প্রচলিত ধারণা। জীবনের কোনো না কোনো সময় আমরা গ্যাসট্রিকে আক্রান্ত হই বলে ধারণা করি। পেটে ব্যথা, বুকে জ্বালা, খাওয়ায় অরুচি, বদ হজম, ঢেঁকুর ওঠা, মল ত্যাগে অনিয়ম, পেট ফেঁপে থাকা, হাত-পা জ্বালা করা, চাদি গরম হওয়া, অস্থিরতা থেকে শুরু করে শারীরিক সব উপসর্গকেই রোগীরা গ্যাসট্রিক মনে করেন। এ অসুস্থতা যে কারণেই হোক না কেন রোগীরা হরহামেশা এর জন্য প্রেসক্রিপশন ছাড়া পেপটিক আলসারের জন্য নির্ধারিত নানাবিধ ওষুধ সেবন করে থাকেন। হাতুড়ে চিকিৎসক, ওষুধ বিক্রেতারাও এতে দারুণ উৎসাহ বোধ করেন।
পেপটিক আলসার পরিপাকতন্ত্রের একটি অসুখ। এর উপসর্গে পেটে ব্যথা, বুকে জ্বালা করে- এটা সত্য। কিছু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাই এ রোগ শনাক্তকরণ নিশ্চিত করতে পারে। তখনই ওষুধে তা নিরাময় সম্ভব। রোগীরা যেসব উপসর্গকে গ্যাসট্রিক মনে করেন তা অন্য কোনো মারাÍক রোগের কারণেও হতে পারে। যেমন হার্টের অসুখ ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ, পিত্তথলিতে প্রদাহ বা পাথর, অগ্নাশয়ে প্রদাহ, আমাশয় কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা অন্ত্রের øায়ুবিক বৈকল্য। এন্টাসিড, রেনিটিডিন কিংবা ওমিপ্রাজল গ্র“পের ওষুধে এসব অসুখ নিরাময় হয় না।
গ্যাসট্রিক ল্যাটিন শব্দ। এর অর্থ পাকস্থলী সংক্রান্ত। গ্যাসের সঙ্গে এর কোনো বৈজ্ঞানিক সম্পর্ক নেই। পাকস্থলীতে বেশি এসিড হলে তাকে হাইপার এসিডিটি বলে, ঘা হলে পেপটিক আলসার কিংবা গ্যাসট্রিক আলসার বলে। ক্যান্সার হলে গ্যাসট্রিক ক্যান্সার বলে। এ রোগ নির্ণয়ের জন্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে, আছে নির্দিষ্ট চিকিৎসা ব্যবস্থা। পেটে গ্যাস হচ্ছে মনে করে এন্টাসিড খাওয়া অবৈজ্ঞানিক, অপচয়। গ্যাস মনে করে গ্যাস বের করার জন্য ঢেঁকুর ওঠালে খাদ্য নালীতে আরও বেশি পরিমাণে গ্যাস আটকা পড়ে, ফলে দ্বিতীয়, তৃতীয় কিংবা বারবার ঢেঁকুর ওঠানো অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়।
সূত্রঃ ইন্টারনেট

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন