গাজরের গল্প
গাজরের গল্প
গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন। এই বিটা ক্যারোটিন শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবার চোখের পুষ্টি জোগায়, চোখের স্নায়ুকে করে শক্তিশালী। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত কচি গাজর খায়, তাদের চোখের অসুখ হয় তুলনামূলক কম। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে গাজরের গুরুত্ব অনেক।
গাজরের রস দেহে চর্বির মাত্রা কমায়। তাই ওজন কমাতে চান এমন ব্যক্তিরা কচি গাজর, কাঁচা পেপে, কচি বাঁধাকপির টুকরা খেতে পারেন ভাত, আলু, রুটির পরিবর্তে। গাজর রক্তের প্রধান উপাদান আরবিসিকে দীর্ঘজীবী করে। এতে রক্তে বেড়ে যায় হিমোগ্লোবিনের মাত্রা। রক্ত বাড়াতে হলে তাই প্রতিদিন অন্তত একটি কচি গাজর খান।
শরীরের যেসব কোলেস্টেরল রক্তের মধ্যে মিশে রক্তে জমাট বেঁধে যায়, হূৎপিণ্ড থেকে রক্ত সারা শরীরে পৌঁছাতে বাধা তৈরি করে, সেসব কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় গাজর। আর কিছু কোলেস্টেরল বা চর্বি রয়েছে, যা ত্বকে কোলেস্টেরলের বা লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
যেকোনো বড় অস্ত্রোপচারের পর রক্তের ঘাটতি হয়। এই ঘাটতি পূরণ করবে গাজর। মানুষের মেধাশক্তি বাড়ানোর জন্য কাজ করে গাজর। মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলোকে করে দ্বিগুণ কর্মক্ষম। তাই গাজর হোক আপনার বন্ধু।
নতুন দাঁত বের হয়েছে বা সবজি দিয়ে খিচুড়ি খেতে পারে, এমন শিশুদের জন্য গাজর দিয়ে তৈরি খিচুড়ি যথেষ্ট উপকারী। গাজর খেলে দাঁতের মাড়ির দুর্বলতা কমে, খাবার হজম হয় ভালোভাবে। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশজাতীয় উপাদান। এই উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
ন্যাচারাল অ্যান্টি অক্সিডেন্টের পরিমাণ গাজরে অনেক বেশি, যা তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে খনিজ লবণও রয়েছে পর্যাপ্ত হারে, যা মানুষের হাড়, দাঁত, নখ, চুলের জন্য বয়ে আনে সুফল। শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটও এর উপাদান। তাই গাজর বেশি মিষ্টি হলে কিডনি রোগে আক্রান্ত, অতিরিক্ত মোটা ব্যক্তি ও ডায়াবেটিসের রোগীরা গাজর খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিন। মাটির নিচে জন্মানোর জন্য এতে শর্করার পরিমাণ থাকে বেশি, ডায়াবেটিসের রোগীরা গাজরের পরিমাণ কমিয়ে সালাদে বাড়িয়ে দিন শসার পরিমাণ।
মায়ের দুধের পরিবর্তে কৌটার দুধ খায়, এমন শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় বেশি। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ দেবে গাজরের খিচুড়ি। শিশু গাজরের খিচুড়ি না খেলে দিতে পারেন গাজরের হালুয়া। গাজরের হালুয়া শিশুদের বুদ্ধি বিকাশে সাহায্য করে। কারণ, চিনি থাকে হালুয়ায়। চিনি মানে গ্লুকোজ, যা মস্তিষ্কের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে।
গ্রন্থনা: ডা. ফারহানা মোবিন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন