অধ্যাপক শহীদ মোতাহহারী

শহীদ মোতাহহারী ছিলেন এমন এক ব্যক্তিত্ব যিনি খোদার সাথে গভীর সম্পর্ক সৃষ্টি করেছিলেন এবং তা লালন করে গেছেন। তিনি তাঁর সমস্ত কিছু সম্পূর্ণরূপে শারীরিক ও মানসিকভাবে ইসলামের সুমহান পথে নিঃশেষ (ত্যাগ) করে গেছেন। অধ্যাপক মোতাহহারী এক ধর্মীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ ক

অধ্যাপক শহীদ মোতাহহারী
শহীদ মোতাহহারী ছিলেন এমন এক ব্যক্তিত্ব যিনি খোদার সাথে গভীর সম্পর্ক সৃষ্টি করেছিলেন এবং তা লালন করে গেছেন। তিনি তাঁর সমস্ত কিছু সম্পূর্ণরূপে শারীরিক ও মানসিকভাবে ইসলামের সুমহান পথে নিঃশেষ (ত্যাগ) করে গেছেন।
অধ্যাপক মোতাহহারী এক ধর্মীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন সে যুগের একজন ধার্মিক-বিদ্বান ব্যক্তি। তিনি আয়াতুল্লাহ বোরুজেরদী এবং ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর মতো শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষা লাভের জন্য ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র কোম গমন করেন।
পড়াশুনার পাশাপাশি শহীদ মোতাহহারী দর্শনশাস্ত্র ও সমসাময়িক বিজ্ঞান অধ্যয়নে গভীর বুৎপত্তি লাভ করেন। তিনি তাঁর জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে দর্শনশাস্ত্রের সবগুলো মতের সাথে পরিচিতি লাভ করেন।
তিনি ১৯৫২ সালে তেহরানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের ইসলামী পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৫৫-১৯৭৮ সাল পর্যন্ত একজন বিভাগীয় সদস্য হিসাবে ধর্মীয় কলেজে পিএইচডি মানের ক্লাস পর্যন্ত শিক্ষা দান করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি ইমাম খোমেইনী (রহ.) সহ গ্রেফতার হন। ইমাম খোমেইনী ইরাকে নির্বাসনের পর তিনি ইসলামী মুক্তি আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্বদান করেন এবং বিপ্লবী আলেমদেরকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। ১৯৬৯ সালে শহীদ মোতাহহারী অন্যান্য আয়াতুল্লাহ সহযোগে সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এক বিবৃতি প্রদান করেন। বিবৃতিতে ফিলিস্তিনে যুক্তরাষ্ট্রের ঘৃণ্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়। তিনি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য ত্বরিত ত্রাণ সাহায্য পৌঁছানোর জন্য আত্মনিয়োগ করেন।
উদ্ধত বিশ্বশক্তি ধর্ম সম্পর্কে ধারণা দিয়ে আসছিল যে, ধর্ম বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রগতির পথে অন্তরায়। কিন্তু শহীদ মোতাহহারী তাঁর বক্তৃতায় তা প্রতাখ্যান ও খণ্ডন করে বলেন : ‘কিছু ব্যক্তি মনে করেন যে, অন্যান্য বিজ্ঞান ধর্মের কাছে সম্পূর্ণরূপে বাইরের জিনিস এবং ইসলাম বিজ্ঞানের যে অবদানের কথা বলেছে তা ধর্মীয় বিজ্ঞান। কিন্তু এটা কোনো আসল ব্যাপার নয়। যে ধরনের বিজ্ঞান মুসলমানদের জন্য কল্যাণকর এবং তাদের সমস্যাকেন্দ্রিক তাকেই ধর্মীয় বিজ্ঞান বলা হয়।’
বিগত শাসনামলসমূহে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছিল প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বুদ্ধিজীবীদের দ্বারা পরিপূর্ণ। আর সে সময় ইসলাম ছিল অপসৃয়মাণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এমন ছিল যে, সকল ছাত্র ইসলামী আচরণে, যেমন নামায পড়তে লজ্জাবোধ করত। কেননা তাদেরকে ‘ফ্যানাটিক’, ‘পশ্চাৎপদ’, ‘বিজ্ঞান-বিরুদ্ধ’ বলে আখ্যা দেয়া হতো, অধিকন্তু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আচরণের জন্য আক্রমণ করত। অধ্যাপক মোতাহহারীর দৃষ্টিতে এ সমস্যা ছিল নিম্নরূপ : ‘যুবসমাজের নৈতিক ও ধর্মীয় অধঃপতনের মূল কারণসমূহ তাদের ধারণা ও চিন্তাসমূহের মধ্যেই বিদ্যমান। এই প্রজন্মের মন-মানসিকতা যথেষ্টভাবে ধর্মীয় অনুশাসনে পরিচালিত নয়- যার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। যদি তাদেরকে পরিচালিত করতে কোনো সমস্যা আসে তা হবে তাদেরকে জানা ও মোকাবিলার জন্য তাদের ভাষা ও যুক্তিকে না জানার সমস্যা।’
এরই ভিত্তিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং ছাত্রদের সাথে ইসলামের সম্পর্ক জুড়ে দেন। তিনি তাঁর বক্তৃতা, প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে তাদের ভুল ধারণার অপনোদন করেন।
তিনি পরবর্তীকালে ইমাম খোমেইনী (রহ.) কর্তৃক সংগ্রামী আলেমদের ঐক্য গঠনে কর্তৃত্ব পান। তিনি বিপ্লবী পরিষদের সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হন। অধ্যাপক মোতাহহারী ইমামকে সর্বোতভাবে সহযোগিতা করেন।
সঠিক যোগ্যতা, আন্তরিকতা ছিল তাঁর চরিত্রের অন্যতম বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এ দুটি গুণ তাঁর ভিতরে এত শক্তভাবে সংযুক্ত হওয়ার ফলেই খোদার সাথে তাঁর মিলন সম্ভব হয়েছিল। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের মধ্যে রয়েছে আমদানি করা বস্তুবাদের (অনুপ্রবিষ্ট বস্তুবাদ) বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা। তিনি খোদায়ী দর্শনকে সবার জন্য গ্রহণীয় করার জন্য নিরলসভাবে চেষ্টা করেন।
শহীদ মোতাহহারী ছিলেন ইমাম খোমেইনীর ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত পরামর্শদাতা। ইমাম খোমেইনী গভীর মর্মবেদনার মধ্যেও বলেছিলেন : ‘সে ছিল আমার জীবনের নির্যাস।’ ইমাম খোমেইনী নিজের সন্তানের শাহাদাতেও কোনো অশ্রুপাত করেননি, কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে অধ্যাপক মোতাহহারীর শাহাদাতে শোক প্রকাশ করেন এবং দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেন : ‘আমাদেরকে হত্যা কর, আমরা শহীদ হবার জন্য নিজেদের নিবেদিত করছি।’
তিনি বিশটি গ্রন্থ ও অসংখ্য বক্তৃতা রেখে গেছেন। এখানে তার কয়েকটির নাম উল্লেখ করা হলো : ঐশী বিচার; বিগত শতাব্দীতে ইসলামী আন্দোলন; বিশ্বের দৃষ্টিতে তাওহীদবাদী; বিপ্লব এবং নবুওয়াত; মানুষ এবং বিশ্বাস, বস্তুবাদের দিকে আকর্ষণের কারণ।
যদিও অধ্যাপক মোতাহহারীর শাহাদাত ইসলামী বিশ্বের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি তথাপি প্রত্যেকেরই একথা মনে রাখা দরকার, শাহাদাত হচ্ছে সমাজদেহে রক্ত সঞ্চালন।
শহীদ অধ্যাপক মোতাহহারী
শহীদ অধ্যাপক মোতাহহারী সম্পর্কে পত্রিকার কয়েকটি পাতায় লিখতে যাওয়া সমুদ্রকে একটি কলসির মধ্যে প্রবেশ করানোর শামিল। আপনি যখন এই নিবন্ধটি পাঠ করবেন তখন চট করে শিক্ষক মোতাহহারীর ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য আপনার কাছে প্রতিভাত হয়ে উঠবে।
শহীদ মোতাহহারী ছিলেন এমন এক ব্যক্তিত্ব যিনি খোদার সাথে গভীর সম্পর্ক সৃষ্টি করেছিলেন এবং তা লালন করে গেছেন। তিনি তাঁর সমস্ত কিছু সম্পূর্ণরূপে শারীরিক ও মানসিকভাবে ইসলামের সুমহান পথে নিঃশেষ (ত্যাগ) করে গেছেন।
অধ্যাপক মোতাহহারী এক ধর্মীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন সে যুগের একজন ধার্মিক-বিদ্বান ব্যক্তি। তিনি আয়াতুল্লাহ বোরুজেরদী এবং ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর মতো শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষা লাভের জন্য ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র কোম গমন করেন।
পড়াশুনার পাশাপাশি শহীদ মোতাহহারী দর্শনশাস্ত্র ও সমসাময়িক বিজ্ঞান অধ্যয়নে গভীর বুৎপত্তি লাভ করেন। তিনি তাঁর জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে দর্শনশাস্ত্রের সবগুলো মতের সাথে পরিচিতি লাভ করেন।
তিনি ১৯৫২ সালে তেহরানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের ইসলামী পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৫৫-১৯৭৮ সাল পর্যন্ত একজন বিভাগীয় সদস্য হিসাবে ধর্মীয় কলেজে পিএইচডি মানের ক্লাস পর্যন্ত শিক্ষা দান করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি ইমাম খোমেইনী (রহ.) সহ গ্রেফতার হন। ইমাম খোমেইনী ইরাকে নির্বাসনের পর তিনি ইসলামী মুক্তি আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্বদান করেন এবং বিপ্লবী আলেমদেরকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। ১৯৬৯ সালে শহীদ মোতাহহারী অন্যান্য আয়াতুল্লাহ সহযোগে সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এক বিবৃতি প্রদান করেন। বিবৃতিতে ফিলিস্তিনে যুক্তরাষ্ট্রের ঘৃণ্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়। তিনি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য ত্বরিত ত্রাণ সাহায্য পৌঁছানোর জন্য আত্মনিয়োগ করেন।
উদ্ধত বিশ্বশক্তি ধর্ম সম্পর্কে ধারণা দিয়ে আসছিল যে, ধর্ম বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রগতির পথে অন্তরায়। কিন্তু শহীদ মোতাহহারী তাঁর বক্তৃতায় তা প্রতাখ্যান ও খণ্ডন করে বলেন : ‘কিছু ব্যক্তি মনে করেন যে, অন্যান্য বিজ্ঞান ধর্মের কাছে সম্পূর্ণরূপে বাইরের জিনিস এবং ইসলাম বিজ্ঞানের যে অবদানের কথা বলেছে তা ধর্মীয় বিজ্ঞান। কিন্তু এটা কোনো আসল ব্যাপার নয়। যে ধরনের বিজ্ঞান মুসলমানদের জন্য কল্যাণকর এবং তাদের সমস্যাকেন্দ্রিক তাকেই ধর্মীয় বিজ্ঞান বলা হয়।’
বিগত শাসনামলসমূহে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছিল প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বুদ্ধিজীবীদের দ্বারা পরিপূর্ণ। আর সে সময় ইসলাম ছিল অপসৃয়মাণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এমন ছিল যে, সকল ছাত্র ইসলামী আচরণে, যেমন নামায পড়তে লজ্জাবোধ করত। কেননা তাদেরকে ‘ফ্যানাটিক’, ‘পশ্চাৎপদ’, ‘বিজ্ঞান-বিরুদ্ধ’ বলে আখ্যা দেয়া হতো, অধিকন্তু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আচরণের জন্য আক্রমণ করত। অধ্যাপক মোতাহহারীর দৃষ্টিতে এ সমস্যা ছিল নিম্নরূপ : ‘যুবসমাজের নৈতিক ও ধর্মীয় অধঃপতনের মূল কারণসমূহ তাদের ধারণা ও চিন্তাসমূহের মধ্যেই বিদ্যমান। এই প্রজন্মের মন-মানসিকতা যথেষ্টভাবে ধর্মীয় অনুশাসনে পরিচালিত নয়Ñ যার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। যদি তাদেরকে পরিচালিত করতে কোনো সমস্যা আসে তা হবে তাদেরকে জানা ও মোকাবিলার জন্য তাদের ভাষা ও যুক্তিকে না জানার সমস্যা।’
এরই ভিত্তিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং ছাত্রদের সাথে ইসলামের সম্পর্ক জুড়ে দেন। তিনি তাঁর বক্তৃতা, প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে তাদের ভুল ধারণার অপনোদন করেন।
তিনি পরবর্তীকালে ইমাম খোমেইনী (রহ.) কর্তৃক সংগ্রামী আলেমদের ঐক্য গঠনে কর্তৃত্ব পান। তিনি বিপ্লবী পরিষদের সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হন। অধ্যাপক মোতাহহারী ইমামকে সর্বোতভাবে সহযোগিতা করেন।
সঠিক যোগ্যতা, আন্তরিকতা ছিল তাঁর চরিত্রের অন্যতম বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এ দুটি গুণ তাঁর ভিতরে এত শক্তভাবে সংযুক্ত হওয়ার ফলেই খোদার সাথে তাঁর মিলন সম্ভব হয়েছিল। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের মধ্যে রয়েছে আমদানি করা বস্তুবাদের (অনুপ্রবিষ্ট বস্তুবাদ) বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা। তিনি খোদায়ী দর্শনকে সবার জন্য গ্রহণীয় করার জন্য নিরলসভাবে চেষ্টা করেন।
শহীদ মোতাহহারী ছিলেন ইমাম খোমেইনীর ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত পরামর্শদাতা। ইমাম খোমেইনী গভীর মর্মবেদনার মধ্যেও বলেছিলেন : ‘সে ছিল আমার জীবনের নির্যাস।’ ইমাম খোমেইনী নিজের সন্তানের শাহাদাতেও কোনো অশ্রুপাত করেননি, কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে অধ্যাপক মোতাহহারীর শাহাদাতে শোক প্রকাশ করেন এবং দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেন : ‘আমাদেরকে হত্যা কর, আমরা শহীদ হবার জন্য নিজেদের নিবেদিত করছি।’
তিনি বিশটি গ্রন্থ ও অসংখ্য বক্তৃতা রেখে গেছেন। এখানে তার কয়েকটির নাম উল্লেখ করা হলো : ঐশী বিচার; বিগত শতাব্দীতে ইসলামী আন্দোলন; বিশ্বের দৃষ্টিতে তাওহীদবাদী; বিপ্লব এবং নবুওয়াত; মানুষ এবং বিশ্বাস, বস্তুবাদের দিকে আকর্ষণের কারণ।
যদিও অধ্যাপক মোতাহহারীর শাহাদাত ইসলামী বিশ্বের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি তথাপি প্রত্যেকেরই একথা মনে রাখা দরকার, শাহাদাত হচ্ছে সমাজদেহে রক্ত সঞ্চালন।
সূত্রঃ ইন্টারনেট

 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন