রোদ হতে সাবধান!

রোদ চামড়ার জন্য ভাল এবং রোদে যত যাওয়া যায় ততই ভাল। এমন একটি কথা অনেকেই বলে থাকেন। তবে, এ ধরণের কথা মোটেও ঠিক নয়। রোদ দেহের জন্য ভাল নয় সে কথা আমরা বলছি না বরং বলতে চাই, অন্যাবশ্যক রোদে যাবেন না, অনাবশ্যক রোদ থেকে দূরে থাকা ত্বকের জন্য ভাল। আপনি হয়ত

রোদ হতে সাবধান!
রোদ চামড়ার জন্য ভাল এবং রোদে যত যাওয়া যায় ততই ভাল। এমন একটি কথা অনেকেই বলে থাকেন। তবে, এ ধরণের কথা মোটেও ঠিক নয়। রোদ দেহের জন্য ভাল নয় সে কথা আমরা বলছি না বরং বলতে চাই, অন্যাবশ্যক রোদে যাবেন না, অনাবশ্যক রোদ থেকে দূরে থাকা ত্বকের জন্য ভাল। আপনি হয়ত জানেন না, অতিরিক্ত সূর্য রশ্মি ত্বক ক্যান্সারের কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে। আপনার স্বাস্থ্য অনুষ্ঠানে বিষয় আলোচনা করেছেন, বাংলাদেশের অন্যতম খ্যাতনামা চিকিৎসক, বগুড়া মেডিক্যাল কলেজের চর্ম ও যৌন বিভাগের প্রধান প্রফেসর শাহাবুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

সাদা চোখে সূর্যের আলোকে সাদা মনে হলেও তা যে আসলে সাদা নয় সে কথা আমরা প্রায় সবাই জানি। সাত রং-এর সমাহারে সূর্যের আলোর রং গঠিত। এই সাত রং-এর এক প্রান্তে রয়েছে ভায়োলেট বা বেগুনী ও তার বিপরীত প্রান্তে রয়েছে রেড বা লাল। এ গুলো হলো দৃশ্যমান রং। এর বাইরেও খালি চোখে অদৃশ্য এমন কিছু রশ্মি, সূর্যের আলোতে রয়েছে। এগুলো হলো অতি বেগুণী রশ্মি, গামা রে, এক্স রে ও ভ্যাকুয়াম রে। এ ছাড়া লাল রং-এর প্রান্ত সীমায় যে সব অদৃশ্য রশ্মি রয়েছে তা হলো অবলোহিত বা ইনফ্রা রে ও রেডিও ওয়েভ। এ সব দৃশ্য ও অদৃশ্য রশ্মিকে নিয়ে সূর্যের আলো গঠিত।
সূর্যের আলোতে মানব ত্বকের জন্য যে সব ক্ষতিকারক রশ্মি রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো অতি বেগুণী রশ্মি। এই রশ্মি তিন ভাগে বিভক্ত, এ বি ও সি। তবে পৃথিবীর আবহ বা বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তর অতি বেগুণী রশ্মি বা আলট্রা ভায়োলেট রশ্মির 'সি'কে পুরোপুরি শুষে নেয়। তাই এর সংস্পর্শে আমরা আসি না বা এ রশ্মি পৃথিবীতে পৌঁছায় না। পৃথিবীতে সূর্যের যে আলো এসে পৌঁছায় তাতে দুই থেকে পাঁচ শতাংশ ‘আলট্রা ভায়োলেট বি' রয়েছে। আর বাকিটা অর্থাৎ ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ ‘আলট্রা ভায়োলেট এ'।
মানব ত্বকে সূর্যের আলো এসে পড়ার পর কি হয় সে কথা বোধহয় এতোক্ষণে জানতে ইচ্ছা হচ্ছে। প্রথমত সূর্যের আলো যে নেহাৎ আলো নয় তা এক রকম শক্তি সে কথা আমরা জানি। এই আলো ত্বকে পড়ার পর কিছুটা প্রতিফলিত হয়ে প্রকৃতিতে ফিরে যায়। কিছু আলো ত্বকে প্রবেশ করে, কিছু আলো ত্বকের রাসায়নিক পদার্থ শুষে নেয়। সূর্যের যে আলো এ ভাবে ত্বকের রাসায়নিক উপাদান শুষে নেয় তা গভীরে প্রবেশ করে নানা বায়োলজিক্যাল পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এখানে একটা কথা মনে রাখতে হবে মানব দেহের সকল ত্বক একই পরিমাণ আলো শুষে নেয় না। চামড়ার রং ভেদে আলো শুষে নেয়ার ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটে। সাধারণ ভাবে সাদা চামড়ার লোকদের জন্য সূর্যের আলো বেশী ক্ষতিকারক হয়ে ওঠতে পারে। তাদের ক্ষেত্রে সূর্যের আলোর কারণে ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। তবে কালো চামড়ায় এ ধরণের আশংকা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে ত্বকের ক্যান্সার দেখা যায়। তবে এ জাতীয় ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সাদা মানুষদের দেশগুলোতে অর্থাৎ আমেরিকা বা ইউরোপীয় দেশগুলোতে। আর এ জাতীয় ক্যান্সার সবচেয়ে কম হয় বা আদৌ হয় না, আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলোতে।
সূর্যের আলোতে তাৎক্ষণিক ক্ষতির বিষয়টি গ্রামীণ একটি ছড়ায় চমৎকারভাবে উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, 'চাঁদ মুখেতে রোদ লেগেছে, ডালিম ফেটে পড়ে।' সূর্যের আলোর তাপে ত্বক যে রক্তিম হয়ে ওঠে সে কথাই সুন্দর করে এ ছড়ায় বলা হয়েছে। তবে সাধারণভাবে এ রক্তিম ভাব স্থায়ী হয় না। রোদ থেকে ছায়াতে আসার পরপরই তা চলে যায়। ত্বকে ল্যাংগারহাম নামে এক জাতের কোষ থাকে। এ সব কোষ দেহ প্রতিরক্ষার সাথে জড়িত। সূর্যালোকে বেশী থাকলে এ সব কোষের পরিমাণ হ্রাস পায়। ফলে দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিশেষ করে ত্বকের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এ সব কোষ হ্রাস পায় বলে শেষপর্যন্ত ত্বকের ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। একই সাথে ত্বকের সংক্রমণজনিত রোগের আশংকাও বেড়ে যেতে পারে। উপযুক্ত কাপড়-চোপড় ছাড়া বা খালি গায়ে দীর্ঘ দিন রোদে কাজ করার ফলে ত্বকে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ পড়তে পারে। ত্বকের অকাল বার্ধক্য দেখা দিতে পারে। চিকিৎসাবিদ্যার পরিভাষায় একে ফটো এজিং বা রোদজনিত বার্ধক্য বলা হয়। ত্বকে এই অকাল বার্ধক্যের ছাপ হিসাবে ত্বকের বলীরেখা

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন