ভুল খাবারে বুদ্ধিনাশ

ভুল খাবারে বুদ্ধিনাশ
প্রাচীন গ্রিসের চিকিৎসাবিদ হিপোক্রেটস দু' হাজার বছর আগে প্রথম বলেছিলেন, যে সব খাবার আমরা খাই তা সরাসরি আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। হিপোক্রেটসকে অনেকেই আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক বলে মনে করেন। অবশ্য দু' হাজার বছর আজ আমরা বুঝতে পারছি যে, তার সে কথা কতোটা সত্য ছিল। লস অ্যাঞ্জেলসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য নিয়ে সম্প্রতি নতুন এক সমীক্ষা চালানো হয়। একদল ইঁদুরকে ছয় সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অতি মাত্রায় ফ্রুকটোজ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো হয়। তারপর দেখা গেল, এ সব ইঁদুর তুলনামূলকভাবে কম শিখতে ও মনে রাখতে পারছে। ফল-মুল এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারে ফ্রুকটোজ পাওয়া যায়। কথিত কোমল পানীয়সহ আরো অনেক খাবারে এ উপাদান অনিবার্যভাবে পাওয়া যায়। আমেরিকায় প্রতি বছর মাথা পিছু পরিশোধিত চিনি ব্যবহার করা হয় ৪৫ কেজি। এ সবের অর্ধেকেই হলো ফ্রুকটোজ। বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও যে এর তুলনায় অনেক কম ফ্রুকটোজ ব্যবহার করা হয় মনে করলে বোধহয় ঠিক হবে না। গ্লুকোজ জাতীয় মিষ্টি বেশি খেলে দেহে তার একটি প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। দেহ বাড়তি ইস্যুলিন তৈরি করে এবং আমাদের আর খাওয়ার স্পৃহা নেই তেমন একটি চেতনার সৃষ্টি করে। কিন্তু ফ্রুকটোজে এ রকম কোনও প্রতিক্রিয়া ঘটে না। উল্টো ইনস্যুলিনের প্রতিক্রিয়া প্রতিহত করে। অবশ্য ফ্রুকটোজের বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে এই প্রথম কোনো গবেষণা হলো না। এর আগেও এ ধরনের আলাদা গবেষণা হয়েছে এবং তাতেও একই ফল দেখা গেছে।
কেবল ফ্রুকটোজই নয়, আধুনিক খাবারে অতি মাত্রায় সংম্পৃক্ত চর্বি থাকে। তবে ইঁদুর নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, ওমেগা থ্রি সমৃদ্ধ খাবার দাবার দেয়ার পর আবার তাদের বুদ্ধির মাত্রা প্রায় পুরানো অবস্থায় ফিরে এসেছে। খাবারে প্রাকৃতিক ফল-মূল, শাক-সবজি বেশি থাকলে তাতে মানসিক বুদ্ধিমত্তা অটুট থাকে এবং অকালে বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। শুরু করেছিলাম হিপোক্রেটসের কথা দিয়ে শেষ করি তার কথা দিয়ে। তিনি বলেছেন, 'খাদ্য হয়ে উঠুক তোমার ওষুধ।'
সূত্রঃ ইন্টারনেট

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন