হজরত আব্বাস (আ.)
হজরত আব্বাস (আ.)
رَحِمَ اللَّهُ الْعَبَّاسَ فَلَقَدْ آثَرَ وَ أَبْلَى وَ فَدَى أَخَاهُ بِنَفْسِهِ حَتَّى قُطِعَتْ يَدَاهُ فَأَبْدَلَهُ اللَّهُ عَزَّ وَ جَلَ بِهِمَا جَنَاحَيْنِ يَطِيرُ بِهِمَا مَعَ الْمَلَائِكَةِ فِي الْجَنَّةِ
যতদিন পযন্ত হজরত খাদিজা জিবীত ছিলেন ততদিন পযন্ত রাসুল (সা.) অন্য কাউকে বিবাহ করেননি। অনুরূপভাবে যতদিন পযন্ত হজরত ফাতিমা (সা.আ.) জিবীত ছিলেন হজরত আলী (আ.) আর কাউকে বিবাহ করেননি। হজরত ফাতিমা যাহরা (সা.আ.) হজরত আলী (আ.) এর সাথে প্রায় ৯ বছর জীবন যাপন করেন এবং রাসুল (সা.) এর সাহাবীদের নিমম অত্যাচারের কারণে তিনি এই দুনিয়া থেকে চীরতরে বিদায় নেন।
হজরত ফাতিমা যাহরা (সা.আ.) এর শাহাদতের পরে হজরত আলী (আ.) একদা তার বড় ভাই আকিলের কাছে আসেন। তিনি ছিলেন সেই যুগের বংশ বিশেষজ্ঞ। তিনি তাঁর ভাইকে বলেন যে, তিনি যেন তার জন্য এমন এক বংশের নিবাচন করে যে, বংশের লোকেরা হচ্ছে সাহসী। তখন আকিল ইমামকে বলে যে, হে আলী (আ.) আমি তোমার জন্য এমন এক বংশের মেয়ে নিবাচন করবো যে বংশের লোকেরা খুব সাহসী। আমি যে মেয়েকে তোমার জন্য নিবাচন করেছি তার বাবা এবং তার পূব পুরুষেরা হচ্ছে আরবের বীরদের মধ্যে অন্যতম।
এই মেয়েটির নাম হচ্ছে ফাতিমা, যার বংশ ধারা হচ্ছে নিন্মরূপঃ ফাতিমা বিনতে হাযাম বিন খালিদ বিন রাবিয়া বিন ওয়ালিদ বিন কাআব বিন আমের বিন কেলাব বিন রাবিয়া বিন আমের বিন সাআসাআ বিন মুয়াবিয়া বিন বাকর বিন হাওয়াযেন ঐতিহাসিকদের মতে এরা সবাই আরবের বীরদের মধ্যে অন্যতম।
ইমাম আলী আ.) তখন ফাতিমা কে বিবাহ করেন এবং তার থেকে ৪জন সন্তান এই দুনিয়ার বুকে জন্মগ্রহণ করেন। এই চার জন সন্তানের মধ্যে প্রথম সন্তান ছিলেন আব্বাস (আ.)।ঐতিহাসিকদের বণনামতে তিনি ৪ঠা শাবান ২৪ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার কুনিয়া ছিল আবুল ফাযল।
হজরত আব্বাস (আ.) যৌবনে পদাপণ করলে তিনি আব্দুল্লাহ বিন আব্বাসের কন্যা লাবাবেহ এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তার থেকে দুইটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করেন তার মধ্যে প্রথমজনের নাম হচ্ছে ফাযল এবং দ্বীতিয়জনের নাম হচ্ছে উবায়দুল্লাহ। ফাযল যিনি বেশী দিন জিবীত ছিলেন না এবং তার ছোট ভাইয়ের পূ্বেই মারা যান। কিন্তু উবাইদুল্লাহ থেকে একাধিক সন্তান জন্মগ্রহন করে।
হজরত আব্বাস (আ.) ৩৪ বছর বয়সে ইসলাম রক্ষার লক্ষ্যে কারবালার মরুপ্রান্তরে শহীদ হন এবং শাহাদতের পূবে তার দুই হাত কেটে ফেলা হয় ও পরে তাকে শহীদ করা হয়।
হজরত আব্বাসের (আ.) ফজিলতে অনেক কথা বণিত হয়েছে কিন্তু তার মধ্যে ইমামদের বাণী হচ্ছে অন্যতম। ইমাম সাজ্জাদ (আ.) থেকে হজরত আব্বাস সম্পকে একাধিক রেওয়ায়েত বণিত হয়েছে যেমনঃ একদা ইমাম সাজ্জাদ (আ.) রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং তার চাচাতো ভাই উবাইদুল্লাহ সাথে তার সাক্ষাত হয় তখন তিনি তাকে বলেনঃ রাসুল (সা.) এর জন্য খারাপ দিন সমূহের মধ্যে ওহদের দিনটি ছিল খুব খারাপ কেননা সেদিন তার চাচা হামযা শহীদ হন এবং অনুরূপভাবে মোতা যুদ্ধের দিনটি ছিল আরেকটি খারাপ দিন কেননা সেই দিন তার আরেক চাচা জাফর শহীদ হয় । কিন্তু সেই দিনটির মতো না যেদিন ইমাম হুসাইনের বিরূদ্ধে ৩০ হাজার সৈন্য বাহিনী কারবালার মরুপ্রান্তরে একত্রিত হয়েছিল। তারা ইমাম হুসাইন (আ.) এর রক্ত পিপাসু ছিল এবং তাকে খোদার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে হত্যা করার জন্য উদ্ব্যেত হয়েছিল। ইমাম হুসাইন (আ.) তাদের খোদার শপথ দিয়ে নসিহত করেন কিন্তু তারা তাপরেও তাকে নিমমভাবে হত্যা করে। তিনি আরো বলেনঃ যে, আল্লাহ রহম করুক হজরত আব্বসের উপরে কেননা তার উপরে যে বিপদ এসেছিল কিন্তু তিনি তারপরেও নিজের জীবনকে তার ভাই ইমাম হুসাইনের উপরে উৎসগ করে দেন এবং তার দুই হাত কেটে ফেলা হয়। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তার দুই হাতের বিনিময়ে তাকে দুটি পাখা দান করেছেন যার মাধ্যেমে তিনি বেহেস্তে উড়ে বেড়ান যেভাবে জাফর ইবনে আবি তালিবকে আল্লাহ তায়ালা দুইটি পাখা দান করেছেন যার মাধ্যমে তিনি বেহেস্তে উড়ে বেড়ান। আল্লাহ তায়ালার কাছে হজরত আব্বাসের এত সম্মান রয়েছে যে, পৃথিবীর সমস্ত শহীদেরা তার এই সম্মান ও পদমযাদা দেখে আশ্চযিত হবে।
ইমাম (আ.) হজরত আব্বাস (আ.) সম্পকে আরো বলেন যে, ৯ই মহরম আসরের সময় যখন উমর ইবনে আস হামলা আদেশ জারী করে। তখন ইমাম হুসাইন (আ.) হজরত আব্বস (আ.) কে বলেনঃ
হে আব্বাস আমার ভাই তুমি সাওয়ার হয়ে যাও ও তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর যে তারা কি করতে চাই? পরে আমরা দেখতে পাই যে হজররত আব্বাস (আ.) এজিদ বাহিনীর কাছে যায় এবং তাদের সাথে আলোচনা করে এবং আবশেষে তাদের কে রাজি করতে সক্ষম হয় যে যুদ্ধ যেন আগামীকাল শুরু হয়। ইতিহাস বলে যে, দশই মহরম এজিদ বাহিনীর সাথে ইমাম হুসাইন (আ.) এর উপরে হামলা করে এবং একের পর এক নবী বংশের সদস্যদেরকে শহীদ করেন। হজরত আব্বাস (আ.) ও বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন এবং অবশেষে শহীদ হয়ে যান।
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন