ইমাম মাহদী (আ.)’এর চারজন প্রতিনিধি
ইমামের চারজন প্রতিনিধি
স্বল্পমেয়াদী অদৃশ্যকালেশিয়া মাযহাবের বিশিষ্ট চারজন ব্যক্তি ইমাম মাহ্দীর (আঃ) প্রতিনিধি বা খলিফা ছিলেন।যারা প্রতিনিয়ত তাঁর খেদমতে ছিলেন এবং তারা যে ইমামের প্রতিনিধি তা সাবার কাছেইগ্রহণীয় ছিল।...
অবশ্য এই চারজন ব্যতীতইমামের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে আরও প্রতিনিধি নিযুক্ত ছিল, কিন্তু তারাও এই চারজনবিশেষ প্রতিনিধির মাধ্যমেই ইমামের সাথে সংযোগ স্থাপন করত। তদ্রূপ ঐ প্রতিনিধিদেরব্যাপারে ইমামের যে আদেশ নির্দেশ থাকতো তা তাঁর এই চারজন বিশেষ প্রতিনিধির মাধ্যমেইপাঠাতেন (আল মাহ্দী, পৃঃ- ১৮২)। মরহুম আয়াতুল্লাহ্ সাইয়্যেদ মোহ্সেন আমিনেরবক্তব্য অনুযায়ী ইমামের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র এই চারজনই বিশেষ প্রতিনিধি হিসাবেদায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলেন যা অন্যান্য প্রতিনিধিদের ছিল না। অন্যান্য প্রতিনিধিদেরমধ্যেযথাক্রমে: আবুল হুসাইন মুহাম্মদ বিন জা’ফার আসাদী, আহ্মাদবিন ইসহাক আশআ’রী, ইব্রাহীম বিন মুহাম্মদ হামাদানী, আহ্মাদ বিন হামযাহ্ বিন ইয়াসাপ্রমূখ ছিলেন (আ’য়ানুশ শিয়া, খন্ড- ৪, পৃঃ- ২১)।
ইমামের চারজন প্রতিনিধিরাহলেন যথাক্রমে:
১-জনাব, আবু আ’মরো উসমান বিন সাঈদ আ’মরী।
২-জনাব, আবু জা’ফর মুহাম্মদ বিন উসমান বিন সাঈদ আ’মরী।
৩-জনাব, আবুল কাসেম হুসাইন বিন রুহ নওবাখতী।
৪-জনাব, আবুল হাসান আলী বিন মুহাম্মদ সামারী।
আবু আ’মরো উসমান বিন সাঈদমানুষের আস্থাভাজন ও উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন হযরত হাদী ও হযরত আসকারী (আঃ)-এরওপ্রতিনিধি ছিলেন (মুনতাহাল মাকাল, আল মাহ্দী, পৃঃ- ১৮১)। ইমাম মাহ্দীর (আঃ)নির্দেশে তিনি ইমাম আসকারী (আঃ)-এর কাফন ও দাফন করান (আ’য়ানুশ শিয়া, খন্ড- ৪, পৃঃ-১৬)। তিনি ইরাকের সামেরা শহরের আসকার অঞ্চলে বসবাস করতেন বিধায় তাকেও আসকারীউপাধীতে সম্বোধন করা হত। আববাসীয় খেলাফতের লোকজন যেন বুঝতে না পারে যে তিনি ইমাম(আঃ)-এর প্রতিনিধি বা তার কাজের ব্যাপারেও যেন কিছু জানতে না পারে। সে জন্য তিনিতেল বিক্রয়ের কাজ করতেন (আ’য়ানুশ শিয়া, খন্ড- ৪, পৃঃ- ১৬)। যখনই ইমাম আসাকারীর (আঃ)সাথে অনুসারীদের যোগাযোগ অসম্ভব হয়ে পড়তো তখন তার কাছে শিয়াদের খোমস, জাকাত ...ইত্যাদির অর্থ সম্পদ ইমামের কাছে পৌছানোর জন্য দিত। তিনি এই অর্থ সম্পদ তার তেলেরটিনের মধ্যে ভরে তেল বিক্রয়ের ছলনায় তা ইমামের কাছে পৌছে দিত (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৪৪)।
আহ্মাদ বিন ইসহাক কোমীবলেন: ইমাম হাদীর (আঃ) কাছে এ বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলাম যে, -আমি কখনও এখানে আবারকখনও অন্য জায়গায় যাই। আর যখন এখানে থাকি সবসময় আপনার কাছেও আসতে পারিনা, এমতাবস্থায় আমি কাকে অনুসরণ করব বা কার কথা মেনে চলব?
বললেন: এই আবু আ’মরো উসমানবিন সাঈদ আ’মারী আমার বিশ্বাস ভাজন ও আমিন। সে যা কিছু তোমাদেরকে বলবে মনে করবে যেআমিই তোমাদেরকে বলছি। আর যা কিছু তোমাদেরকে দেবে মনে করবে যে আমিই তোমাদেরকেদিয়েছি।
আহ্মাদ বিন ইসহাক বলেন:ইমাম হাদীর (আঃ) শাহাদাতের পর ইমাম আসকারীর (আঃ) কাছে গিয়েছিলাম এবং ঐ একই রকমপ্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করলাম। এই প্রশ্নের জবাবে তিনি তাঁর বাবার মতই একই কথা বললেন:আবু আ’মরো পূর্ববর্তী ইমামের বিশ্বাস ভাজন ও আমিন ছিল, তদ্রূপ সে আমার জীবদ্দশাতেএবং মৃত্যুর পরেও আমাদের বিশ্বাস ভাজন ও আমিন থাকবে। যা কিছু সে তোমাদের প্রতি বলবেতা আমার পক্ষ থেকে মনে করবে এবং যা কিছু তোমাদের কাছে পৌছে দিবে তাও আমার পক্ষ থেকেমনে করবে (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৪৪)।
উসমান বিন সাঈদ ইমামআসকারীর (আঃ) শাহাদতের পর ইমাম মাহ্দীর (আঃ) নির্দেশে প্রতিনিধিত্বতাকে অব্যহতদেয়। নিয়ম অনুযায়ী শিয়ারা তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন তার কাছে পৌছে দিত এবং ইমামের দেওয়াজবাবকে আবার তার কাছ থেকেই নিয়ে আসতো (আল মাহ্দী, পৃঃ- ১৮১, বিহার, খন্ড- ৫১, পৃঃ-৩৪৬)।
মরহুম মুহাক্কেক দামাদ তারুসিরাতুল মুসতাকিম” নামক গ্রন্থে এভাবে লিখেন: আবু আ’মরো উসমান বিন সাঈদ আ’মরীউল্লেখ করেছেন যে, ইবনে আবি গানাম কাযভীনী বলেন, ইমাম হাসান আসকারী (আঃ) কোনসন্তান-সন্ততী না রেখেই মৃত্যুবরণ করেন! শিয়ারা কাযভীনীর সাথে ঝগড়া-বিবাদ করে এবংইমামের পবিত্র রূহ মোবারকের উদ্দেশ্যে চিঠি পাঠায়, চিঠিটি যৌগিক ছিল না অর্থাৎকাগজের উপর কালি বিহীন কলম দ্বারা লেখা হয়েছিল। এভাবে লেখার উদ্দেশ্য এই ছিল যে, তাঁর পক্ষ থেকে আসা উত্তরটি পরবর্তীতে ইতিহাসের পাতায় একটি প্রতীক বা অলৌকিক বিষয়হিসাবে লিপিবদ্ধ থাকবে। ঐ চিঠির জবাবটি ইমামের পক্ষ থেকে নিম্মলিখিত ভাবেআসে:
“বিসমিল্লাহীর রহমানিররাহীম”
আল্লাহ্ তা’য়ালা আমাদের ওতোমাদেরকে যেন পথভ্রষ্ট হওয়া এবং ফিতনা করা থেকে দুরে রাখেন। তোমাদের মধ্যে যে একটিঅংশ তাদের দ্বীনের ও ওলী আমরের বেলায়তের উপর দিধা-দ্বন্দ্বে উপনীত হয়েছে সে খবরআমাদের কাছে পৌছেছে। এই খবরটি আমাদেরকে প্রভাবিত ও দুঃখিত করেছে। অবশ্য আমাদেরপ্রভাবিত ও দুঃখিত হওয়াটা আমাদের জন্য নয় বরং তা তোমাদের জন্যই। কেননা আল্লাহ্ ওসত্য আমাদের সাথে।যারা আমাদের থেকে দুরে সরে যায় তারা আমাদের জন্য কোন আতঙ্কেরবিষয় নয়। আমরা আল্লাহ্ রাববুল আ’লামিনের পক্ষ হতে শিক্ষিত-দীক্ষিত ও প্রেরিতহয়েছি। আর অন্যান্য সকল সৃষ্টিত জীব আমাদের মাধ্যমে শিক্ষিত-দীক্ষিত পরিপূর্ণতাপায়। আমরা আল্লাহ্ রাববুল আ’লামিনের নূর থেকে আলোকিত হই আর অন্যান্য সকল কিছুইআমাদের নূর থেকে আলোকিত হয়। কেন তোমরা দিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েছো, তোমরা কি জাননাযে অতীত ইমামগণের কাছ থেকে তোমাদের কাছে যা কিছু পৌছেছে অবশ্যই তা বাস্তবায়িত হবে(অতীত ইমামগণ খবর দিয়েছিলেন যে ক্বায়েম (আঃ) অদৃশ্যতে থাকবে), তোমরা কি দেখনি যেকিভাবে আল্লাহ্ তা’য়ালা হযরত আদম (আঃ) থেকে শুরু করে অতীত ইমামের সময় পর্যন্তসর্বদা তাদেরকে আশ্রয়স্থল হিসাবে নিযুক্ত করেছেন। যাতে করে মানুষ তাদের আশ্রয় গ্রহণকরতে পারে এবং তাদের সংস্পর্শে থেকে তারা সঠিক পথের সন্ধান পেতে পারে। যখনই একটিপ্রতিক অবর্তমান হয়েছে সাথে সাথে আরেকটি প্রতীক তার স্থানে বর্তমান রূপ নিয়েছেন। আরযখনই একটি নক্ষত্রের অবসান ঘটেছে তখনই আরেকটি নক্ষত্রের উদয় হয়েছে। তোমরাকি এটাইভেবে নিয়েছ যে, আল্লাহ্ তা’য়ালা তাঁর পাঠানো এগারতম প্রতিনিধির রূহকে কবজ করে তাঁরকাছে নিয়ে যাওয়ার পর নিজের দেয়া দ্বীনকে বাতিল করে দিয়েছেন এবং তাঁর নিজের ও তারসৃষ্টির মধ্যকার যোগাযোগের মাধ্যমকে বিচ্ছিন্ন করেছেন। অবশ্যই এরকম নয় এবং এরকমহবেও না কখনও। আর এমনই মনে করছো যে আল্লাহ্র নির্দেশ প্রতিষ্ঠিত হবে যখন কিনা তাঁরপছন্দকারী বা প্রতিনিধিত্বকারীরা থাকবে না। না তা অবশ্যই না। সুতরাং আল্লাহ্কে ভয়করে চল এবং আমাদের কাছে তোমাদেরকেআত্মসমর্পণকরএবংপরিচালনারদায়িত্বকেআমাদেরকাছেফিরিয়ে দাও। আমি তোমাদেরকে এব্যাপারে উপদেশ দান করছি, আর এ ব্যাপারে আল্লাহ্ আমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে রইলেন(আনওয়ারুল বাহীহ্, পৃঃ- ৩২৪)।
উসমান বিন সাঈদ মৃত্যুরপূর্বে ইমাম মাহ্দীর (আঃ) নির্দেশে নিজের সন্তান আবু জা’ফর মুহাম্মাদ বিন উসমানকেতার স্থলাভিষিক্ত করে মানুষের মাঝে পরিচয় করিয়ে দেয়।
মুহাম্মদ বিন উসমান নিজেওতার পিতার মতই খোদাভীরুতা, ন্যায়পরায়নতা ও মহানুভবতার দিক দিয়ে মানুষের মাঝেবিশ্বাসী ও সম্মানের অধিকরী ছিলেন। হযরত ইমাম আসকারী (আঃ) আগেও এই পিতা ও পুত্রেরবিশ্বস্ততার ও আস্তাভজনের ব্যাপারে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। মরহুম শেখ তুসি এ ব্যাপারেলিখেন: শিয়া সম্প্রদায় তাদের ন্যায়পরায়নতা, খোদাভীরুতা ও আমানতদারীতার ব্যাপারেঅবগত ছিল (বিহারুল আনোয়ার,খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৪৫-৩৪৬, গাইবাত -শেখ তুসি, পৃঃ-২১৬,২১৯)।
ইমাম মাহ্দীর (আঃ) প্রথমপ্রতিনিধি জনাব উসমান বিন সাঈদ এর মৃত্যুবরণের পরে তৌওকি’য়ী (তোকি’য়ী হচ্ছেইমাম-এ-জামান (আঃ) এর কাছ থেকে তার অনুসারীদের কাছে আসা চিঠি ) পাওয়া যায় যাতে তারমৃত্যুর ও তার সন্তান মুহাম্মদকে ইমামের দ্বিতীয় প্রতিনিধির পদে অধিষ্ঠিত করারব্যাপারে খবর ও নিদের্শ ছিল, যা নিম্মে উল্লেখ করা হল:
اِناَّ لِلَّهِ وَ اِناَّ اِلَيْهِ راجِعُونতার দেওয়া বিভিন্নপ্রকার আদেশ-নিদের্শের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি ও বিচার-আচারের প্রতি রাজী আছি। তোমারপিতা সম্মানজনকভাবে জীবন-যাপন করেছে এবং সৌভাগ্যবান হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। আল্লাহ্তাকে রহমত দান করুন এবং তাকে তার ইমামগণের (আঃ) সাথে স্থান দান করুন। সর্বদা সে তারইমামগণের কাজে শরিক হত এবং যা কিছুতে আল্লাহ্ তা’য়ালা খুশি হবেন ও ইমামগণের পছন্দছিল তাই করার চেষ্টা করতো। আল্লাহ্ তা’য়ালা তার উপর রাজী ও খুশি হোক এবং তারভুল-ত্রুটিগুলোকে ক্ষমা করুক।
এই তৌওকি’য়ের অন্য আরেকজায়গায় বলেছেন:
আল্লাহ্ রাববুল আ’লামিনতোমাকে বড় ধরনের পুরস্কারে পুরস্কৃত করুক এবং তোমাকে মুসিবতের মধ্যেও স্বস্তি ওশান্তি দান করুক। তুমি মুসিবতের মধ্যে আছো এবং আমরাও একই পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম।তোমার বাবার বিচ্ছেদ তোমাকে ও আমাদেরকে দারুণভাবে মর্মাহত করেছে এবং তার অনুপস্থিতিতোমাকে ও আমাদেরকে মুসিবতের মধ্যে পতিত করেছে। আল্লাহ্ তা’য়ালা তাকে তার রহমতেরসর্ব উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন স্থান দান করুক। তোমার পিতা এতই পরিপুর্ণতায় সৌভাগ্যবানছিল যে আল্লাহ্ তা’য়ালা তাকে তোমার মত সন্তান দিয়েছেন, যে পিতার পরে নিজেই তারপ্রতিনিধি হবে ওতার প্রতিটি বিষয়ের দায়িত্বশীল হয়ে তার জন্য আল্লাহ্র কাছে রহমত ওমাগফিরাত কামনা করবে। আমি আল্লাহ্র দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি এ কারণে যে সমস্তইমামগণের দৃষ্টি তোমার উপর এবং যা কিছু আল্লাহ্ তোমার মধ্যে ও তোমার কাছে দিয়েছেনতা খুশি ও আনন্দের বিষয়। আল্লাহ্ তা’য়ালা তোমাকে সাহায্য করুন এবং শক্তিশালী ও দৃঢ়করুক। আর তিনি যেন তোমাকে সাফল্য দান করে তার ছায়ার তলায় স্থান দেন (বিহারুলআনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৪৯,কামালুদ্দিন, খন্ড- ২, পৃঃ- ১৮৮, হাদিস- ৩৮)।
আব্দুল্লাহ্ বিন জাফরহামিরী বলেন:উসমান বিন সাঈদ এর মৃত্যুর পর ইমামের হাতে লেখা একাটি চিঠি আমাদেরকাছে আসে। যাতে লেখা ছিলআবুজাফর (মুহাম্মদ
বিন উসমান বিন সাঈদ আ’মরী)তার পিতার স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছে (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৪৯)।
অন্য আরেকটি তৌওকি’য়ীতেইসহাক বিন ইয়াকুব কুলাইনীর প্রশ্নের উত্তরে ইমাম এমনই লিখেছেন:
মুহাম্মদ বিন উসমান আ’মরীতার ও তার পিতা যে আগেই গত হয়েছে আল্লাহ্ তাদের উপর রাজী ও খুশি আছেন। সুতরাং সেওঐরূপ আমার প্রতিনিধি এবং তার লিখিত বিষয়গুলি হচ্ছে আমারই লেখা (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৪৯-৩৫০, কাশফুল গ্বাম্ম, খন্ড- ৩, পৃঃ- ৪৫৭) ।
আব্দুল্লাহ্ বিন জাফরহামিরী বলেন: মুহাম্মদ বিন উসমানকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম ইমাম মাহ্দীকে (আঃ) দেখেছো?
বলল: হ্যাঁ, তাঁর সাথেআমার শেষ দেখা হয়েছিল বাইতুল্লাহেল হারামের (কা’বা ঘর) পাশে, আর তিনি বলছিলেন:
( اللَّهُمَّ اَنْجِزْ لى ما وَعَدْتَنى )
(বিহারুল আনোয়ার, খন্ড-৫১, পৃঃ- ৩৫৩-৩ ৫৪)
এবং তাকে মুসতাযারে(বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৫৩-৩ ৫৪) দেখেছিলাম, আর তিনি বলছিলেন:
( اَللَّهُمَّ اَنْتَقِمْ بي اَعْدائي )
(বিহারুল আনোয়ার, খন্ড-৫১, পৃঃ- ৩৫৩-৩ ৫৪)
মুহাম্মদ বিন উসমান আরওবলেন: ইমাম মাহ্দী (আঃ) প্রতি বছর হজ্বের সময় সেখানে উপস্থিত হয়ে সবাইকে দেখেন এবংসবাইকে চিনতে পারেন। আর অন্যরাও তদ্রূপ তাকে দেখতে পায় কিন্তু চিনতে পারে না(বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৫৩-৩ ৫৪)।
মুহাম্মদ বিন উসমান নিজেরজন্য একটি কবর তৈরী করে তা সাজ (এক ধরনের কাপড় বা পোশাক) দিয়ে ঢেকে রেখেছিল। আর সেইকাপড়ের উপর পবিত্র কোরআন মজিদের কয়েকটি আয়াত ও ইমামগণের (আঃ) নাম লিখে সেই কবরেরমধ্যে গিয়ে প্রতিদিন এক পারা কোরআন তেলাওয়াৎ করত (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ-৩৫৩-৩ ৫৪)।
তার এই কাজের কারণে, সেতার মৃত্যুর দিনক্ষণ সম্বন্ধে জানতে পারে। যে দিনক্ষণ সম্বন্ধে সে আগেই খবর পেয়েছিলঠিক সে দিনেই সে মৃত্যুবরণ করেছিল (আল কুনী ওয়াল আলকাব, খন্ড- ৩, পৃঃ- ২৬৮)।তারমৃত্যুর কিছু সময় আগে শিয়া মাযহাবের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি তার কাছে আসলে তাদেরসামনে ইমাম মাহ্দীর (আঃ) নির্দেশে আবুল কাসেম হুসাইন বিন রূহ নওবাখতিকে ইমামেরপরবর্তী প্রতিনিধি হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেন: সে আমার স্থলাভিষিক্ত, তোমরা এখনথেকে তার সাথে যোগাযোগ রাখবে (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ-৩৫৪-৩৫৫, গাইবাত -শেখতুসি, পৃঃ- ৩২৬-৩২৭)।
জনাব আবু জাফর মুহাম্মদবিন উসমান আ’মরী ৩০৫ হিজরী কামারী সনে মৃত্যুবরণ করেন (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৫২)।
হুসাইন বিন রুহনওবাখতি:
জনাব আবুল কাসেম হুসাইনবিন রুহ নওবাখতি তার পক্ষের ও বিপক্ষের লোকজনদের কাছে বিশেষ সম্মানের পাত্র ছিলেন।তিনি আক্বল, উন্নত চিন্তা, খোদাভিরুতা ও ফযিলতের দিক দিয়ে বিশেষ পরিচিত ছিলেন।বিভিন্ন ফিরকা ও মাযহাবের লোকেরা তার কাছে আসা-যাওয়া করত। ইমামের দ্বিতীয় প্রতিনিধিমুহাম্মদ বিন উসমান আ’মরীর আমলে তিনি তার কাজের কয়েকটি বিভাগের দায়িত্বশীল ছিলেন।বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে বিশেষ করে মুহাম্মদ বিন উসমান, জাফর বিন আহমাদ বিন মুতাইলকোমীর সাথে অন্যদের তুলনায় তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক এতই গভীর ছিল যেমুহাম্মদ বিন উসমানের জীবনের শেষ দিকে জাফর বিন আহমাদের বাড়ীতে তার খাবার রান্নাহত। দ্বিতীয় প্রতিনিধির সাহাবাদের মধ্যে জাফর বিন আহমাদ বিন মুতাইলেরই অন্যদেরতুলনায় তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী ছিল। জীবনের শেষ সময়ে এবং যখনমুহাম্মদ বিন উসমান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের অপেক্ষায় তখন জাফর বিন আহমাদ তার মাথারকাছে ও হুসাইন বিন রুহ নওবাখতিতারপায়েরকাছেবসে ছিলেন । এমতবস্থায় মুহাম্মদ বিনউসমান জাফর বিন আহমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন: ইমামের প্রতিনিধিত্বকে আবুল কাসেম বিনরুহ নওবাখতির উপর অর্পন করার জন্য আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জাফর বিন মুহাম্মদ তারনিজের জায়গা থেকে উঠে গিয়ে হুসাইন বিন রুহ নওবাখতির হাত ধরে তাকে মুহাম্মদ বিনউসমানের মাথার কাছে বসিয়ে দিল ও নিজে তার পায়ের কাছে বসলো (বিহারুল আনোয়ার,খন্ড-৫১, পৃঃ- ৩৫৪)।
ইমাম মাহ্দীর (আঃ) পক্ষথেকে হুসাইন বিন রুহ নওবাখতির ব্যাপারে এই তৌওকি’য়ী আসে:
ুআমরা তাকে জানি। আল্লাহ্রাববুল আ’লামিন যেন তার প্রতিটি ভাল ও পছন্দনীয় বিষয়গুলোকে তাকে চিনিয়ে দেন এবং তারক্ষমতা দিয়ে যেন তাকে সাহায্য করেন। তার লিখিত বিষয়ের প্রতি খবর রাখি ও তারব্যাপারে বিশ্বাস রাখি। আমাদের কাছে তার মর্যাদা ও সম্মান আছে যা তাকে আনন্দিতকরবে। আল্লাহ্ রাববুল আলামিন যেন তার মধ্যে উন্নত দিকগুলোকে বৃদ্ধি করে দেন। কেননাতিনি সকলের মা’বুদ ও সকলের উপর কর্তৃত্বশালী। প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্ তা’য়ালারযার কোন শরিক নেই এবং দরুদ ও সালাম সেই আল্লাহ্ প্রেরিত নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁরপরিবারের উপর।”
এই চিঠিটি রোজ শনিবার ৩০৫হিজরীর সাউওয়াল মাসের ৬ তারিখে ইস্যু হয় (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৫৬, গায়বাত -শেখ তুসি, পৃঃ- ২২৭) ।
আবু সাহল নওবাখতি যিনিএকজন বিশিষ্ট জ্ঞানী ব্যক্তি ও নওবাখতি বংশের বয়জেষ্ঠ ছিলেন এবং অনেক বইও লিখেছিলেনতার কাছে জানতে চাওয়াহল যে কেন তিনি ইমামের প্রতিনিধিত্বে অধিষ্ঠিত না হয়ে আবুলকাসেম হুসাইন রুহ নওবাখতি এই পদে উপনীত হল ?
বললেন: তারা (ইমামগণ)সকলের থেকে বিজ্ঞ এবং যা কিছু নির্বাচন করেন তা অধিকতর উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য।কিন্তু আমি এমন এক লোক যে শত্রুদের সাথে ইমামতের বিষয়ে কথপোকথন ও আলোচনা করি।যদিইমামের প্রতিনিধি হতাম এবং তার অবস্থান সম্পর্কে জানতাম, যেমন এখন আবুল কাসেমহুসাইন বিন রুহ নওবাখতি প্রতিনিধিত্বের সুত্রে জানে, ইমামতের বিয়য়েবিরুদ্ধাচারণকারীদের সাথে তর্ক-বিতর্কে ব্যস্ত হয়ে হয়তো তাদের কাছে ইমামেরঅবস্থানের ব্যাপারে বলে ফেলতাম। কিন্তু সে এ ব্যাপারে এমন শক্ত যে, যদি ইমাম তারজুববার নিচে লুকিয়ে থাকে এবং তাকে বিশাল ধারালো অস্ত্র দিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলাহয়,সে তার জুববা উঠিয়ে নিবে না এবং ইমামকে শত্রুদের সামনে তুলে ধরবে না (বিহারুলআনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৫৯, আল কানী ওয়াল এলকাব, খন্ড-১, পৃঃ- ৯১)।
জনাব আবুল কাসেম হুসাইনবিন রুহ নওবাখতি আনুমানিক ২১ বছর ইমামের প্রতিনিধিত্ব করেন। তার মৃত্যুর আগে তারপ্রতিনিধিত্বকে ইমামের নির্দেশে আবুল হাসান আলী বিন মুহাম্মদ সামারীর নিকটহস্তান্তর করে যায়। ৩২৬ হিজরীর সাবান মাসে তারইন্তেকাল হয়। তার সমাধীস্থানটিবাগদাদে অবস্থিত (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৫৮,৩৬০)।
আবুল হাসানসামরী:
ুমুনতাহা আলমাকাল” নামকগ্রন্থের লেখক ইমামের চতুর্থ প্রতিনিধি আবুল হাসান আলী বিন মুহাম্মদ সামারীরব্যাপারে এভাবে লিখেছেন: তার সম্মান ও কদর এতই বেশী ছিল যে তার ব্যাপারে কোন কথাবলার প্রয়োজন পড়ে না (মুনতাহা আলমাকাল)।
এই মহান ব্যক্তি ইমামমাহ্দীর (আঃ) নির্দেশে হুসাইন বিন রুহ নওবাখতির পরে প্রতিনিধির স্থানেস্থলাভিষিক্ত হয়ে শিয়াদের বিভিন্ন বিষয়ে দেখাশুনার দায়িত্ব প্রাপ্তহন।
মরহুম মুহাদ্দেস কোমীএভাবে লিখেছেন: আবুল হাসান সামারী একদিন একদল সম্মানিত জ্ঞানী ব্যক্তি বৃন্দদেরমধ্যে বলেন, আল্লাহ্ তা’য়াল তোমাদের প্রতি আলী বিন বাবুই কোমীকে হারানোর দুঃখেশান্ত থাকার তৌফিক দান করুন, সে এখনই দুনিয়া থেকে বিদায় নিলো।
উপস্থিত সকলে ঐ সময়, দিন ওমাস লিখে রাখলো। ১৭/১৮ দিন পরে খবর পৌছালো যে ঠিক ঐ সময়েই আলী বিন বাবুই কোমীদুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিলেন (আল কুনী ওয়াল আলকাব, খন্ড- ৩, পৃঃ- ২৩১, বিহার, খন্ড-৫১, পৃঃ- ৩৬১)।
আলী বিন মুহাম্মদ সামারী৩২৯ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন (গাইবাত -শেখ তুসি, পৃঃ- ২৪২-২৪৩) । তার মৃত্যুর পূর্বেশিয়া মাযহাবের একদল লোক তার পাশে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করল, তোমার পরে তোমারস্থলাভিষিক্ত কে হবে?
জবাবে বলল ঃ আমাকে দায়িত্বদেয়া হয়নি যে এ ব্যাপারে কাউকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে যাব(বিহার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৬০)।ইমামের কাছ থেকে যে তৌওকি’য়ীটি ইস্যু হয়েছিল তা তাদেরকে দেখালো। তারা তা থেকে হুবহুনকল করে রাখলো। সেটির বিষয় বস্তু ছিল এরূপ:
“বিসমিল্লাহীর রহমানিররহীম”
ওহে আলী বিন মুহাম্মদসামারী! আল্লাহ্ তা’য়ালা তোমার বিয়োগে তোমার ভাইদের শোক-তাপ করাতে পুরস্কৃত করবেন।তুমি আর ৬ দিন পরে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে।
সুতরাং তোমারদায়-দায়িত্বকে গুছিয়ে নিয়ে এসো এবং কাউকে তোমার স্থলাভিষিক্ত হিসাবে পরিচয় করাবেনা। দীর্ঘমেয়াদী অদৃশ্যকালের সূচনা হয়েছে এবং আল্লাহ্র নির্দেশ না হওয়া পর্যন্তআবির্ভাবের কোন ঘটনাই ঘটবেনা। কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর যখন অন্তরসমূহ কঠিন হয়েযাবে, পৃথিবী জুলুম ও অত্যাচারে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে, তখন অনেকেই আমার অনুসারীদেরকাছে আমার প্রতিনিধি বা আমার সাথে যোগাযোগ আছে এমনটি বলে দাবী করবে। যেন রাখ যারাসুফিয়ানী ও সিইহার (এ দুটি আলামত ইমাম মাহ্দীর (আঃ) আবির্ভূত হওয়ার আগে সংঘটিতহবে) উত্থানের আগে এ ধরণের দাবী করবে অর্থাৎ ইমামের পক্ষ হতে দায়িত্ব প্রাপ্তেরদাবী করবে তারা হচ্ছে মিথ্যাবাদী।
وَ لاَ حَوْلَ وَ لاَ قُوَّةَ اِلاَّ بِاللَّّهِ الْعَلى الْعَظِيم
(বিহার, খন্ড- ৫২, পৃঃ-৩৬১, গাইবাত -শেখ তুসি, পৃঃ- ২৪২-২৪৩, )
৬ষ্ট দিনে জনাব আবুল হাসানসামরী দুনিয়া থেকে বিদায় নেন। খালেনজী রাস্তার কাছে আবী ইতাব নদীর পাসে তাকে দাফনকরা হয় (আ’য়ানুশ শিয়া, পৃঃ- ১৯৩) ।
ইমামের (আঃ) বিশেষপ্রতিনিধিগণ তাদের জামানায় প্রত্যেকেই অধিক পরহেজগার ও সম্মানিত ছিলেন। তারাশিয়াদের আস্থাভাজন ও বিশ্বাসভাজন ছিলেন। স্বল্পমেয়াদী অদৃশ্যকালের সমস্ত সময়টাতেশিয়ারা তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন ও সমস্যাকে তাদের কাছে বর্ণনা করেছে। আর ইমাম (আঃ) সেসকল প্রশ্নের ও সমস্যার সমাধানও তাদের মাধ্যমেই শিয়াদের উদ্দেশ্যে পাঠাতেন। সে সময়এ ধরনের যোগাযোগ সবার জন্যেই সম্ভব ছিল। এমনকি কিছু সংখ্যক যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিএই বিশেষ প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ইমামের সাক্ষাতে উপনীত হয়ে তাকে দেখার সৌভাগ্যওঅর্জন করেছিলেন।
এই স্বল্পমেয়াদী অদৃশ্যেরসময়ে ইমামের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতিনিধিদের মাধ্যমে যে সকল অলৌকিক ঘটনা ঘটতো তা তাদেরপ্রতি মানুষের বিশ্বস্ততা আরও অধিকতর করত। মরহুম শেখ তুসির উদ্ধৃতি দিয়ে“এহতেজাজ” নামক গ্রন্থে লেখা হয়েছে:
ইমামের বিশেষ প্রতিনিধিদেরকেউই তাঁর নির্দেশ বা আগের প্রতিনিধির মাধ্যমে পরিচিত না হওয়া পর্যন্ত প্রতিনিধিত্বপাওয়ার জন্য ছোটা ছুটি করেননি। আর শিয়ারাও কাউকে গ্রহণ করেনি যতক্ষণ পর্যন্ত নাইমামের পক্ষ হতে তাদের মাধ্যমে কোন অলৌকিক ঘটনার অবতারণা হত, বা ইমামের দেয়ানিদর্শন তাদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যেত...( বিহারুল আনোয়ার, খন্ড- ৫১, পৃঃ- ৩৬২) ।
যা হোক, স্বল্পমেয়াদীঅদৃশ্যের পর্ব শেষেদীর্ঘমেয়াদীঅদৃশ্যের পর্বশুরুহয়যা এখনও পর্যন্ত অব্যাহতআছে। স্বল্পমেয়াদী অদৃশ্যের সময় লোকজন তাদের প্রশ্নের জবাব ইমামের কাছ থেকে তাঁরপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিতে পারতো। কিন্তু এখন এটা আর সম্ভব নয়। এখন লোকজন অবশ্যইতাদের প্রশ্নকে ইমামের সাধারণ প্রতিনিধিদের কাছে বর্ণনা করে তাদের কাছ থেকেই জবাবসংগ্রহ করবে। কেননা তারা ফতোয়া দেয়ার বিষয়ে পান্ডিত্ব লাভ করেছেন যা তাদের দেয়াদৃষ্টি ভঙ্গি গ্রহণযোগ্য। সাথে সাথে এ ব্যাপারে বিশেষ রেওয়ায়েত আছে যাপ্রনিধানযোগ্য। মরহুম কাশ্শি লিখেছেন যে ইমামের (আঃ) কাছ থেকে তৌওকি’য়ী ইস্যুহয়েছে তাতে তিনি বলেছেন: আমাদের প্রতিনিধিদের ব্যাপারে আমাদের অনুসারীদের যেন কোনপ্রকার অজুহাত, আপত্তি বা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব না থাকে, কেননা তোমরা যেন রাখ যে আমাদেরগোপন রহস্যগুলোকে তাদের কাছে অর্পন করেছি বা তাদেরকে দিয়েছি (আল মাহ্দী, পৃঃ-১৮২-১৮৩)।
শেখ তুসি, শেখ সাদুক ও শেখতাবরাসী, ইসহাক বিন আম্মারের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করে বলেছেন: আমাদের মাওলা হযরতমাহ্দী (আঃ) তার অদৃশ্য থাকার সময় শিয়াদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্বন্ধে বলেছেন:
( وَ اَماَّ الْحَوادِثُ الْواقِعَةُ فَاْرجِعُوا فِيها اِلى رُواةِ حَديِثِنا فَاِنَّهُمْ حُجَّتى عَلَيْكُمْ وَ اَناَ حُجَّةُ اللَّهِ عَلَيْهِمْ )
যে কোন পরিস্থিতির অবতারণাবা ঘটনা ঘটলে বা আসলে আমাদের হাদীস বর্ণনাকারীদের কাছে শরণাপন্ন হবে, কেননা তারাহচ্ছে তোমাদের জন্য আমার প্রতিনিধি এবংআমি হচ্ছি তাদের জন্য আল্লাহ্র প্রতিনিধি(এহতিজাজ, পৃঃ- ২৮৩) ।
মরহুম তাবরাসীর উদ্ধৃতিদিয়ে ুএহতেজাজ” নামক গ্রন্থে ইমাম সাদিক (আঃ)-এর কাছ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি এই হাদীসে বলেছেন:
(وَ اَماَّ مَنْ كانَ مِنَ الْفُقَهاءِ صائِناً لِنَفْسِهِ حاَفِظاً لِديِنِهِ مُخاَلِفاً لِهَواهُ مُطيِعاً لِاَمْرِ مَوْلاَهُ فَلِلْعَوامِ أَنْ يُقَلِّدوُهُ)
যে সকল ফকিহ্, তারা তাদেরনফসকে নিয়ন্ত্রন করে, দ্বীনের রক্ষক, শয়তানীচিন্তা-চেতনার বিরুদ্ধাচারনকারী ও তারমাওলার (ইমামগণ) নির্দেশের প্রতি আনুগত থাকে, জনসাধারণের উচিৎ তাদেরকে অনুসরণ করেচলা (আল মাহ্দী, পৃঃ- ১৮২-১৮৩) ।
এমতাবস্থায় দীর্ঘমেয়াদীঅদৃশ্যের সময়ে মুসলমানদের দ্বীন ও দুনিয়ার বিষয়াদী দেখাশুনার দায়িত্ব বেলায়তেফকীহ্র হাতে অর্পিত হয়েছে।অবশ্যইএসববিষয়াবলী যেন তার দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী হয়।যদিও ফতোয়া,বিচার ও রায় প্রদানের অধিকার অনেক আগে থেকেই ইমামগণের (আঃ) পক্ষ থেকেতাদের উপর ন্যাস্ত ছিল, কিন্তু তাদেরকে অনুসরণ করে চলার প্রক্রিয়া এই দিন থেকেআনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং ইমাম মাহ্দী (আঃ) আবির্ভাব না করা পর্যন্ত তাঅব্যহত থাকবে।
সূত্রঃ ইন্টারনেট
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন