ইমাম মাহদী (আ.)-এর বৈশিষ্ট্য

ইমাম মাহদী (আ.)-এর বৈশিষ্ট্য

ইমাম মাহদী (আ.)-এর  বৈশিষ্ট্য
ইমাম মাহদী (আ.)-এর বিষয়টি এমনই একটি বিষয়, যেসম্পর্কে বহু সংখ্যক রেওয়ায়াত বর্ণিত হয়েছে৷ ইমামের জীবনের বিভিন্ন পর্যায় যেমন:জন্ম, শৈশবকাল, স্বল্প ও দ্বীর্ঘমেয়াদী অদৃশ্যকাল, আবির্ভাবের নিদর্শন, আবির্ভাবেরপর এবং বিশ্বব্যাপী অনুশাসন সম্পর্কে ইমামগণ হতে পৃথক পৃথক হাদীস বর্ণিত হয়েছে৷যেমনিভাবে তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, অদৃশ্যকালীন পরিস্থিতি, প্রতিক্ষাকারীদেরপুরষ্কার সম্পর্কে অসংখ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে৷ আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হচেছ এইহাদীসসমূহ শিয়া-সুন্নি উভয় মাযহাবের গ্রন্থেই বর্ণিত হয়েছে এবং ইমাম মাহ্দীসম্পর্কিত বহু হাদীসই মুতাওয়াতির৷
ইমাম মাহদী (আ.)-এর আর একটি বৈশিষ্ট্য হচেছ মাসূমগণতাঁর সম্পর্কে অতি সুন্দর সুন্দর কথা বলেছেন৷ যার সমষ্টি থেকে ইমাম মাহদী (আ.)-এরন্যায়নিষ্ঠ বিপ্লবের গুরুত্ব প্রকাশ পায়৷ এখানে আমরা ইমাম মাহদী (আ.) সম্পর্কিতচৌদ্দ মাসুম (আ.) হতে বর্ণিত হাদীসসমূহকে আপনাদের সামনে উপস্থাপনকরেছি:
* রাসূল (সা.) বলেছেন:
"তার সৌভাগ্য, যে মাহ্দীকে দেখবে৷ তারও সৌভাগ্য, যে মাহদীকে ভালবাসবে এবং সেও সৌভাগ্যবান, যে তাঁর ইমামতকে গ্রহণ করবে" (বিহারুলআনওয়ার খণ্ড- ৫২, পৃ.-৩০৯)৷
* ইমাম আলী (আ.) বলেছেন:
"আবির্ভাবের প্রতিক্ষায় থেকো এবং কখনোই আল্লাহর রহমতথেকে বিমুখ হয়ো না৷ এটা অতি সত্য যে, আবির্ভাবের প্রতিক্ষায় থাকা আল্লাহর নিকটসর্বোত্তম ইবাদত" (বিহারুল আনওয়ার খণ্ড- ৫২, পৃ.-৩০৯)৷
* হযরত ফাতিমাতুয্ যাহরা (আ.)-এর কিতাবে বর্ণিতহয়েছে:
অতঃপর বিশ্ববাসীর প্রতি রহমতের জন্য আওলীগণেরপর্যায়ক্রমকে ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর সন্তানের মাধ্যমে পরিপূর্ণতা লাভ করবে৷ যারমধ্যে হযরত মুসার পূর্ণতা, হযরত ঈসার সৌন্দর্য এবং হযরত আইয়ুবের ধৈর্য থাকবে(কামালুদ্ দ্বীন খণ্ড-১, বাব ২৮, হাদীস ১, পৃ.-৫৬৯)৷
* ইমাম হাসান মুজতাবা (আ.) বলেছেন:
আল্লাহপাক শেষ যামানায় একজন মহাপুরুষকে প্রেরণ করবেনএবং তাঁকে ফেরেশ্তাদের মাধ্যমে সাহায্য করবেন এবং তাঁর সাথীদেরকেও রক্ষা করবেন৷তাঁকে পৃথিবীর সবকিছুর উপর প্রাধান্য দেয়া হবে৷ তিনি দুনিয়াকে এমভাবে ন্যায়নীতি ওসাম্যে পরিপূর্ণ করবেন যেমনিভাবে পৃথিবী জুলুম অত্যাচারে ভরে গিয়েছিল৷ সেই ব্যক্তিসৌভাগ্যবান যে, তাঁকে দেখবে এবং তাঁর নির্দেশ পালন করবে (ইহতিজাজা খণ্ড-২, পৃ.-৭০)৷
* ইমাম হুসাইন (আ.) বলেছেন:
আল্লাহ হযরত মাহ্দীর মাধ্যমে ধরিত্রীকে তার মৃত্যুরপর পুনর্জীবিত করেন৷ তাঁর মাধ্যমেই সত্য দ্বীনকে সকল দ্বীনের উপর প্রাধান্য দানকরবেন যদিও মুশরিকরা তা পছন্দ করে না৷ তিনি অদৃশ্যে থাকবেন অনেকেই দ্বীনচ্যুত হবেআবার অনেকেই দ্বীনের প্রতি প্রতিষ্ঠিত থাকবে৷ যে ব্যক্তি অদৃশ্যকালীন অবস্থায়বিভিন্ন অত্যাচার ও মিথ্যাচারে ধৈর্য ধারণ করবে সে রাসূল (সা.)-এর সাথে থেকেমুশরিকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সমপরিমাণ সওয়াব পাবে (কামালুদ্ দ্বীন খণ্ড- ১, বাব৩০, হাদীস ৩, পৃষ্ঠা ৫৮৫)৷
* ইমাম সাজ্জাদ (আ.) বলেছেন:
আমাদের কায়েমের অদৃশ্যকালীন সময়ে যারা আমাদের প্রতিবিশ্বাসে অনড় থাকবে আল্লাহ তাআলা তাকে বদর এবং ওহুদের যুদ্ধে শাহাদত প্রাপ্তদের মতসহস্র শহীদের পুরস্কার দান করবেন (কামালুদ্ দ্বীন খণ্ড- ১, বাব ৩১, হাদীসপৃষ্ঠা৫৯২)৷
* ইমাম বাকের (আ.) বলেছেন:
মানুষের জন্য এমন সময় আসবে যখন তাদের ইমাম অদৃশ্যেথাকবে এবং সেই ব্যক্তি সৌভাগ্যবান যে, ঐ সময়ে আমাদের বেলায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিতথাকবে (কামালুদ্ দ্বীন খণ্ড- ১, বাব ৩২, হাদীস-১৫, পৃষ্ঠা ৬০২)৷
* ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেন:
আমাদের কায়েমের জন্য দৃটি অদৃশ্য রয়েছে একটিস্বল্পমেয়াদী অপরটি দীর্ঘমেয়াদী (গাইবাতে নোমানীবাব ১০, হাদীস ৫, পৃষ্ঠা ১৭৬)৷
* ইমাম কাযিম (আ.) বলেছেন:
ইমাম মাহদী (আ.) দৃষ্টির অন্তরালে থাকবেন কিন্তুমুমিনরা তাঁকে কখনোই ভুলবেন না (গাইবাতে নোমানীবাব ৩৪, হাদীস ৫৬, পৃষ্ঠা৫৭)৷
* ইমাম মুসা রেযা (আ.) বলেছেন:
ইমাম মাহদী (আ.) যখন আবির্ভূত হবেন পৃথিবী তাঁরজ্যোতিতে আলোকিত হয়ে যাবে এবং তিনি ন্যায়বিচারের মানদণ্ড স্থাপন করবেন৷ সুতরাং তখনকেউই কারো প্রতি অত্যাচার করবে না (গাইবাতে নোমানীবাব ৩৫, হাদীস ৫, পৃষ্ঠা৬০)৷
* ইমাম তাকি আল জাওয়াদ (আ.) বলেছেন:
আমাদের কায়েম তিনি যার অদৃশকালীন অবস্থায় তাঁরপ্রতিক্ষায় থাকতে হবে এবং আবির্ভাবের পর তাঁর নির্দেশ পালন করতে হবে (গাইবাতেনোমানীবাব ৩৬, হাদীস ১, পৃষ্ঠা ৭০)৷
* ইমাম হাদী আন্ নাকি (আ.) বলেছেন:
আমার পর ইমাম হচেছ আমার পুত্র হাসান এবং তার পর তারপুত্র মাহ্দী ইমাম হবে এবং তিনি দুনিয়াকে এমভাবে ন্যায়নীতি ও সাম্যে পরিপূর্ণ করবেনযেমনিভাবে পৃথিবী জুলুম অত্যাচারে ভরে গিয়েছিল (গাইবাতে নোমানীবাব ৩৭, হাদীস ১০, পৃষ্ঠা ৭৯)৷
* ইমাম হাসান আসকারী (আ.) বলেছেন:
আল্লাহর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ যে, তিনি আমার মৃত্যুরপূর্বেই আমাকে আমার উত্তরাধিকারী দান করেছেন৷ সে সকল দিক থেকেই রাসূল (সা.)-এরঅনুরূপ (গাইবাতে নোমানীবাব ৩৭, হাদীস ৫,পৃষ্ঠা ১৭৬)৷
সূত্রঃ ইন্টারনেট
 

নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন