কেন হজরত ফাতেমা (সা.আ.) এর ঘরে হামলা করা হয়? -১
কেন হজরত ফাতেমা (সা.আ.) এর ঘরে হামলা করা হয়? -১
উক্ত প্রশ্নগুলোর জবাব দেয়ার পূর্বে ভূমিকা স্বরূপ কিছু কথা এখানে উল্লেখ করার প্রয়োজন বলে মনে করছি। আর তা হচ্ছে কেন কোরআনে ইয়াহুদী, ইয়াহুদীদের বিভ্রান্ত চিন্তা, হজরত হারুন (আ.) এর অনুসরণকে বাদ দিয়ে বাছুর পূজা শুরু করে এবং পূর্ববর্তি নবীদের উপরে অতর্কিত হামলা করা সম্পর্কে করা হয়েছে?
উক্ত প্রশ্নের জবাব দেয়ার পূর্বে ইয়াহুদীদের হজরত মূসার পরে তাদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে।
- তারা মূর্তি পূজা শুরু করে।
- হজরত হারুন (আ.) কে অস্বীকার করে।
- সামেরীকে হজরত মূসা (আ.) এর স্থলাভিসিক্ত হসেবে কবুল করে।
- নবীদের (আ.) কে তারা হত্যা করতো।
- হজরত হারুন (আ.) শুধুমাত্র মূসার উম্মতের ঐক্য বজায় থাকার জন্য ধৈর্যধারণ করেন।
- তারা হজরত হারুন (আ.) কে হত্যা করতে চেয়েছিল।
- তারা তাওরাতকে কে বিকৃত করে।
- তারা হজরত মূসা (আ.) কে একা ছেড়ে দেয় এবং যুদ্ধে তার সাহায্যে করে না।
১- তারা হজরত মূসা (আ.) এর স্থলাভিষিক্তকে মেনে নেয়নিঃ
وَلَمَّا رَجَعَ مُوسَى إِلَى قَوْمِهِ غَضْبَانَ أَسِفًا قَالَ بِئْسَمَا خَلَفْتُمُونِي مِن بَعْدِيَ أَعَجِلْتُمْ أَمْرَ رَبِّكُمْ وَأَلْقَى الألْوَاحَ وَأَخَذَ بِرَأْسِ أَخِيهِ يَجُرُّهُ إِلَيْهِ قَالَ ابْنَ أُمَّ إِنَّ الْقَوْمَ اسْتَضْعَفُونِي وَكَادُواْ يَقْتُلُونَنِي فَلاَ تُشْمِتْ بِيَ الأعْدَاء وَلاَ تَجْعَلْنِي مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
তারপর যখন মূসা নিজ সম্প্রদায়ে ফিরে এলেন রাগাম্বিত ও অনুতপ্ত অবস্থায়, তখন বললেন, আমার অনুপস্থিতিতে তোমরা আমার কি নিকৃষ্ট প্রতিনিধিত্বটাই না করেছ। তোমরা নিজ পরওয়ারদেগারের হুকুম থেকে কি তাড়াহুড়া করে ফেললে এবং সে তখতীগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং নিজের ভাইয়ের মাথার চুল চেপে ধরে নিজের দিকে টানতে লাগলেন। ভাই বললেন,হে আমার মায়ের পুত্র,লোকগুলো যে আমাকে দুর্বল মনে করল এবং আমাকে যে মেরে ফেলার উপক্রম করেছিল। সুতরাং আমার উপর আর শত্রুদের হাসিও না। আর আমাকে জালিমদের সারিতে গন্য করো না। (সূরা আরাফ, আয়াত নং ১৫০)
২- খোদা তাদেরকে এতো নেয়ামত দান করেন কিন্তু তারপরেও তারা গৌবাছুর পূজা করেঃ
وَإِذْ فَرَقْنَا بِكُمُ الْبَحْرَ فَأَنجَيْنَاكُمْ وَأَغْرَقْنَا آلَ فِرْعَوْنَ وَأَنتُمْ تَنظُرُونَ
আর যখন আমি তোমাদের জন্য সাগরকে দ্বিখন্ডিত করেছি,অতঃপর তোমাদেরকে বাঁচিয়ে দিয়েছি এবং ডুবিয়ে দিয়েছি ফেরআউনের লোকদিগকে অথচ তোমরা দেখছিলে। (সূরা বাকারা, আয়াত নং ৫০)
وَإِذْ وَاعَدْنَا مُوسَى أَرْبَعِينَ لَيْلَةً ثُمَّ اتَّخَذْتُمُ الْعِجْلَ مِن بَعْدِهِ وَأَنتُمْ
ظَالِمُونَ
আর যখন আমি মূসার সাথে ওয়াদা করেছি চল্লিশ রাত্রির অতঃপর তোমরা গোবৎস বানিয়ে নিয়েছ মূসার অনুপস্থিতিতে। বস্তুতঃ তোমরা ছিলে যালেম। (সূরা বাকারা, আয়াত নং ৫১)
৩- তারা রাসুল (সা.) রে কথাকে মেনে নেয়নিঃ
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَكُمْ وَرَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّورَ خُذُواْ مَا آتَيْنَاكُم بِقُوَّةٍ وَاسْمَعُواْ قَالُواْ سَمِعْنَا وَعَصَيْنَا وَأُشْرِبُواْ فِي قُلُوبِهِمُ الْعِجْلَ بِكُفْرِهِمْ قُلْ بِئْسَمَا يَأْمُرُكُمْ بِهِ إِيمَانُكُمْ إِن كُنتُمْ مُّؤْمِنِينَ
আর যখন আমি তোমাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিলাম এবং তুর পর্বতকে তোমাদের উপর তুলে ধরলাম যে, শক্ত করে ধর, আমি যা তোমাদের দিয়েছি আর শোন। তারা বলল, আমরা শুনেছি আর অমান্য করেছি। কুফরের কারণে তাদের অন্তরে গোবৎসপ্রীতি পান করানো হয়েছিল। বলে দিন, তোমরা বিশ্বাসী হলে, তোমাদের সে বিশ্বাস মন্দ বিষয়াদি শিক্ষা দেয়। (সূরা বাকারা, আয়াত নং ৯৩)
৪- হজরত মূরা (আ.) এর এতো মজেযা দেখার পরেও তারা গৌবাছুর পূজারী হয়ে যায়ঃ
يَسْأَلُكَ أَهْلُ الْكِتَابِ أَن تُنَزِّلَ عَلَيْهِمْ كِتَابًا مِّنَ السَّمَاء فَقَدْ سَأَلُواْ مُوسَى أَكْبَرَ مِن ذَلِكَ فَقَالُواْ أَرِنَا اللّهِ جَهْرَةً فَأَخَذَتْهُمُ الصَّاعِقَةُ بِظُلْمِهِمْ ثُمَّ اتَّخَذُواْ الْعِجْلَ مِن بَعْدِ مَا جَاءتْهُمُ الْبَيِّنَاتُ فَعَفَوْنَا عَن ذَلِكَ وَآتَيْنَا مُوسَى سُلْطَانًا مُّبِينًا
আপনার নিকট আহলে-কিতাবরা আবেদন জানায় যে, আপনি তাদের উপর আসমান থেকে লিখিত কিতাব অবতীর্ণ করিয়ে নিয়ে আসুন। বস্তুতঃ এরা মূসার কাছে এর চেয়েও বড় জিনিস চেয়েছে। বলেছে, একেবারে সামনাসামনিভাবে আমাদের আল্লাহকে দেখিয়ে দাও। অতএব, তাদের উপর বজ্রপাত হয়েছে তাদের পাপের দরুন; অতঃপর তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ-নিদর্শন প্রকাশিত হবার পরেও তারা গো-বৎসকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল; তাও আমি ক্ষমা করে দিয়েছিলাম এবং আমি মূসাকে প্রকৃষ্ট প্রভাব দান করেছিলাম। (সূরা নিসা, আয়াত নং ১৫৩)
৫- তিনি মুসলমানদেরকে অবগত করেন যেন তারা ইয়াহুদীদের পথ অবলম্বন না করেঃ
أَمْ تُرِيدُونَ أَن تَسْأَلُواْ رَسُولَكُمْ كَمَا سُئِلَ مُوسَى مِن قَبْلُ وَمَن يَتَبَدَّلِ الْكُفْرَ بِالإِيمَانِ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاء السَّبِيلِ
ইতিপূর্বে মূসা (আঃ) যেমন জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন, (মুসলমানগণ) তোমরাও কি তোমাদের রসূলকে তেমনি প্রশ্ন করতে চাও? যে কেউ ঈমানের পরিবর্তে কুফর গ্রহন করে, সে সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়। (সূরা বাকারা, আয়াত নং ১০৮)
৬- হুশিয়ার করে দেয়া হয় যেন মুরতাদ না হয়ে যায়ঃ
وَمَا مُحَمَّدٌ إِلاَّ رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِ الرُّسُلُ أَفَإِن مَّاتَ أَوْ قُتِلَ انقَلَبْتُمْ عَلَى أَعْقَابِكُمْ وَمَن يَنقَلِبْ عَلَىَ عَقِبَيْهِ فَلَن يَضُرَّ اللّهَ شَيْئًا وَسَيَجْزِي اللّهُ الشَّاكِرِينَ
আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয়! তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন। তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন, তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে? বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে, তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না। আর যারা কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং ১৪৪)
৭- হজরত মোহাম্মাদ (সা.) কে সান্তনা দেয়া হয়ঃ
فَإِن كَذَّبُوكَ فَقَدْ كُذِّبَ رُسُلٌ مِّن قَبْلِكَ جَآؤُوا بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُرِ وَالْكِتَابِ الْمُنِيرِ
তাছাড়া এরা যদি তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তবে তোমার পূর্বেও এরা এমন বহু নবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, যারা নিদর্শন সমূহ নিয়ে এসেছিলেন। এবং এনেছিলেন সহীফা ও প্রদীপ্ত গ্রন্থ। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং ১৮৪)
যদি কোরআনে মুনাফিকদের সম্পর্কে এত বেশী বলা হয় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে চিনতে হবে যে মুনাফিক কারা ছিল?
সে যুগের মুনাফিক ছিল ইয়াহুদী, নাসারা এবং কাফেররা যারা ইসলামের পোষাক পরিধান করে মুসলমান এবং রাসুল (সা.) এর কাছে থাকার চেষ্টা করে যেন সময় মতো ইসলামের ক্ষতি সাধন করতে পারে।
১- মুনাফিক কোরআনের দৃষ্টিতেঃ
إِنَّ الْمُنَافِقِينَ يخَُادِعُونَ اللَّهَ وَ هُوَ خَادِعُهُمْ وَ إِذَا قَامُواْ إِلىَ الصَّلَوةِ قَامُواْ كُسَالىَ يُرَاءُونَ النَّاسَ وَ لَا يَذْكُرُونَ اللَّهَ إِلَّا قَلِيلا
অবশ্যই মুনাফিকরা প্রতারণা করেছে আল্লাহর সাথে অথচ তারা নিজেরাই নিজেদেরকে প্রতারিত করে। বস্তুত তারা যখন নামাজে দাড়ায় তখন দাড়ায় একান্ত শিথীলভাবে লোক দেখানোর জন্য আর তারা আ্ল্লাহকে অল্পই সস্মরণ করে। (সূরা নিসা, আয়াত নং ১৪২)
২- মুনাফিকদের আযাব হবে জাহান্নামের সর্বনিন্ম স্তরেঃ
إِنَّ المُْنَافِقِينَ فىِ الدَّرْكِ الْأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ وَ لَن تجَِدَ لَهُمْ نَصِيرًا
নিঃসন্দেহে মুনাফিকেরা রয়েছে জাহান্নামের সর্বনিন্ম স্তরে। আর তোমরা তাদের জন্য কোন সাহায্যেকারী কখনও পাবে না। (সূরা নিসা, আয়াত নং ১৪৫)
৩- মুনাফিকরা সর্বদা ইসলামের ক্ষতি সাধনের চেষ্টায় থাকতোঃ
يحَْذَرُ الْمُنَافِقُونَ أَن تُنزََّلَ عَلَيْهِمْ سُورَةٌ تُنَبِّئُهُم بِمَا فىِ قُلُوبهِِمْ قُلِ اسْتهَْزِءُواْ إِنَّ اللَّهَ مخُْرِجٌ مَّا تحَْذَرُون
মুনাফিকরা এ ব্যাপারে ভয় করে যে, মুসলমানদের উপরে না এমন কোন সূরা নাযিল হয়। যাতে তাদের অন্তরের গোপন বিষয় অবহিত করা হবে। সুতরাং আপনি বলে দিন ঠাট্টা বিদ্রুপ করতে থাক; আল্লাহ তা অবশ্যই প্রকাশ করবেন যার ব্যাপারে তোমরা ভয় করছো। (সূরা তওবা, আয়াত নং ৬৪)
يحَْلِفُونَ بِاللَّهِ مَا قَالُواْ وَ لَقَدْ قَالُواْ كلَِمَةَ الْكُفْرِ وَ كَفَرُواْ بَعْدَ إِسْلَامِهِمْ وَ هَمُّواْ بِمَا لَمْ يَنَالُوا
তারা কসম খায় যে তারা বলেনি অথচ নিঃসন্দেহে তারা বলেছে কুফরী বাক্য এবং মুসলমান হবার পর অস্বীকৃতীজ্ঞাপনকারী হয়েছে। (সূরা তওবা, আয়াত নং ৭৪)
৪- মুনাফিকরা মন্দ শিখাতো এবং ভাল কথা থেকে বারণ করতোঃ
الْمُنَافِقُونَ وَ الْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُم مِّن بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمُنكَرِ وَ يَنهَْوْنَ عَنِ الْمَعْرُوفِ وَ يَقْبِضُونَ أَيْدِيهَُمْ نَسُواْ اللَّهَ فَنَسِيهَُمْ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ هُمُ الْفَسِقُون
মুনাফিক নর নারী সবারই গতিবিধি একরকম শিখায় মন্দ কথা এবং ভাল কথা থেকে বারণ করে এবং নিজ মুঠো বন্ধ রাখে আল্লাহকে ভুলে গেছে তার কাজেই তিনিও তাদের ভূলে গেছেন। নিঃসন্দেহে মুনাফিকরাই নাফরমান। (সূরা তওবা, আয়াত নং ৬৭)
৫- মুনাফিকরা রাসুল (সা.) কে চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছিলঃ
وَمِمَّنْ حَوْلَكُم مِّنَ الأَعْرَابِ مُنَافِقُونَ وَمِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ مَرَدُواْ عَلَى النِّفَاقِ لاَ تَعْلَمُهُمْ نَحْنُ نَعْلَمُهُمْ سَنُعَذِّبُهُم مَّرَّتَيْنِ ثُمَّ يُرَدُّونَ إِلَى عَذَابٍ عَظِيمٍ
আর কিছু কিছু তোমার আশ-পাশের মুনাফেক এবং কিছু লোক মদীনাবাসী কঠোর মুনাফেকীতে অনঢ়। তুমি তাদের জান না; আমি তাদের জানি। আমি তাদেরকে আযাব দান করব দু’বার, তারপর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হবে মহান আযাবের দিকে। (সূরা তওবা, আয়াত নং ১০১)
৬- মুনাফিকরা রাসুল (সা.) এর সাথে মিথ্যা প্রতিশ্রুতিঃ
وَإِذْ يَقُولُ الْمُنَافِقُونَ وَالَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ مَّا وَعَدَنَا اللَّهُ وَرَسُولُهُ إِلَّا غُرُورًا
এবং যখন মুনাফিক ও যাদের অন্তরে রোগ ছিল তারা বলছিল, আমাদেরকে প্রদত্ত আল্লাহ ও রসূলের প্রতিশ্রুতি প্রতারণা বৈ নয়। (সূরা আহযাব, আয়াত নং ১২)
৭- মুনাফিকরা প্রকাশ্য ঈমানের বহিঃপ্রকাশ করে কিন্তু অন্তরে তাদের কুফরে পূর্ণঃ
إِذَا جَاءكَ الْمُنَافِقُونَ قَالُوا نَشْهَدُ إِنَّكَ لَرَسُولُ اللَّهِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّكَ لَرَسُولُهُ وَاللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
মুনাফিকরা আপনার কাছে এসে বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহর রসূল। আল্লাহ জানেন যে,আপনি অবশ্যই আল্লাহর রসূল এবং আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (সূরা মুনাফেকুন, আয়াত নং ১)
৮- মুনাফিকরা ছিল রাসুল (সা.) এর দ্বীনের কাজে বাধা স্বরূপঃ
বিভিন্ন দ্বীন মুনাফিকদের কাছ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে যেমনঃ
- ইয়াহুদীরা মুনাফিকদের থেকেঃ সামেরী, ক্বারুন, বালআমে বাউরা, বারসীসায়ে আবেদ।
- খৃষ্টানরা মুনাফিকদের থেকেঃ ইয়াহুদায়ে আসগার, ইউসা, পুলেস।
- ফেরেস্তাদের মধ্যে ইবলিস ছিল মুনাফিক স্বরূপঃ
এবং যখন আমি হযরত আদম (আঃ)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলীস ব্যতীত সবাই সিজদা করলো। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল। (সূরা বাকারা, আয়াত নং ৩৪)
ইসলামের সমস্ত শত্রুরা হচ্ছে মুনাফিকঃ
- তারা ইসলামের কাজে বাধা হয়ে দাড়িয়েছেঃ
وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انفَضُّوا إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَائِمًا قُلْ مَا عِندَ اللَّهِ خَيْرٌ مِّنَ اللَّهْوِ وَمِنَ التِّجَارَةِ وَاللَّهُ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
তারা যখন কোন ব্যবসায়ের সুযোগ অথবা ক্রীড়াকৌতুক দেখে তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুনঃ আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা। (সূরা জুমআ, আয়াত নং ১১)
- রাসুল (সা.) কে হত্যার চেষ্টাঃ
يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ وَإِن لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ إِنَّ اللّهَ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ
হে রসূল,পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন,তবে আপনি তাঁর পয়গাম কিছুই পৌছালেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। (সূরা মায়েদা. আয়াত নং ৬৭)
খোদা মানুষকে মুরতাদ হওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেনঃ
- হে ঈমানদারগণ! তোমরা যদি কাফেরদের কথা শোন, তাহলে ওরা তোমাদেরকে পেছনে ফিরিয়ে দেবে, তাতে তোমরা ক্ষতির সম্মুখীণ হয়ে পড়বে।
- হে আমার সম্প্রদায়,পবিত্র ভুমিতে প্রবেশ কর,যা আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্ধারিত করে দিয়েছেন এবং পেছন দিকে প্রত্যাবর্তন করো না। অন্যথায় তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। (সূরা মায়েদা, আয়াত নং ২১)
- হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে,অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন,যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন
তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী,মহাজ্ঞানী। (সূরা মায়েদা, আয়াত নং ৫৪)
- নিশ্চয় যারা সোজা পথ ব্যক্ত হওয়ার পর তৎপ্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে,শয়তান তাদের জন্যে তাদের কাজকে সুন্দর করে দেখায় এবং তাদেরকে মিথ্যা আশা দেয়। (সূরা মোহাম্মাদ, আয়াত নং ২৫)
কেন হজরত ফাতেমা (সা.আ.) এর ঘরে হামলা করা হয়?
কোন কারণে হজরত ফাতেমা (সা.আ.) এর ঘরে হামলা করা হয়?
- হজরত মোহাম্মাদ (সা.) ২৩ বছর কষ্টের পরে মদীনাকে ইসলামকে মূল কেন্দ্র তৈরী করে।
- শত্রুরা চেয়েছিল যেভাবেই হোক ইসলামের ক্ষতি সাধন করবে।
- ইসলামের অর্থনৈতিক ক্ষতিসাধন এবং শোবে আবু তালিব।
- হিজরতের রাতে বিভিন্ন গোত্র রাসুল (সা.) কে শহীদ করার জন্য একত্রিত হয়।
- মুসলমানদের সাথে বিভিন্ন যুদ্ধ যেমনঃ খন্দক, ওহদ।
- রাসুল (সা.) হত্যা করার পরিকল্পনা।
- মুসলমানদেরকে দুই ভাগে বিভক্ত করার চক্রান্ত।
- তাবুকের যদ্ধে মদীনায় আক্রমণের পরিকল্পনা।
শত্রুদের মুকাবেলায় রাসুল (সা.) এর কার্যক্রমঃ
- মুসলমানদের দ্বায়িত্বশীলতা।
- যুদ্ধে নেতৃত্ব।
- ইসলামের ভবিষ্যত বাণী।
- ইয়াহুদী, নাসারা এবং মুশরেকিনদের সাথে মুকাবেলা।
- বিভিন্ন সময়ে তার স্থলাভিসিক্তকে পরিচয় করানো।
- বিভিন্ন সময়ে মুনাফিকদের পরিচয় করানো যেমনঃ
বিদায় হজ্বে।
গ্বাদীরে খুমে।
তাবুকের যুদ্ধে।
ওসামার সৈন্য বাহিনী প্রেরণের সময়।
রাসুল (সা.) এর মুকাবেলায় শত্রুদের কার্যক্রমঃ
- শত্রুরা রাসুল (সা.) কে হত্যা করতে পারেনি।
- বিদায় হজ্বের অনুষ্ঠানকে বিফল করতে পারেনি।
- ইসলামে কোন ধরণের অনুপ্রবেশ করতে পারেনি।
রাসুল (সা.) এর শেষ কার্যক্রমঃ
- রাসুল (সা.) বিদায় হজ্বে তার স্থলাভিসিক্তকে নির্বাচন করেন।
- রাসুল (সা.) বিদায় হজ্বে সবার কাছ থেকে আলী (আ.) এর জন্য বাইয়াত নেন।
- রাসুল (সা.) এর জীবনের শেষ সপ্তাহে যাদের মদীনাতে থাকার প্রয়োজন মনে করেননি তাদেরকে ওসামার সৈন্যর সাথে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
- যারা ওসামার নেতৃত্বকে মেনে নেয়নি তাদের উপরে রাসুল (সা.) লানত প্রেরণ করেছেন।
চলবে.....
নতুন কমেন্ট যুক্ত করুন